কলকাতা: ববিতা সরকারের চাকরি গেল এবার অনামিকা রায়ের হাতে। মঙ্গলবার ববিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন ববিতা, তাই তাঁকে বেশি নম্বর দিয়েছে কমিশন। এই কারণে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ববিতার নিয়োগপত্র এবং কমিশনকে সুপারিশ পত্র প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। কাউন্সিলিংয়ের পর অনামিকা রায়কে সুপারিশপত্র দেওয়ার জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ আদালতের। তিন সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে চাকরি দিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতাকে কারচুপি করে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাঁকে বঞ্চিত করে অঙ্কিতাকে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে আদালতের দ্বারস্থ হন ববিতা। সেই মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে অঙ্কিতার চাকরি বাতিল করে ববিতাকে তা দেওয়া হয়। তবে কমিশনকে ভুল তথ্য দেওয়ায় এবার ববিতার সেই চাকরি বাতিল করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ই। চাকরি এবার গেল অনামিকা রায়ের হাতে। পাশাপাশি অঙ্কিতার থেকে পাওয়া প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। প্রথম দফায় ১১ লক্ষ টাকা ১৯ মে-র মধ্যে জমা দিতে হবে ববিতাকে। বাকি টাকা ৬ জুনের মধ্যে জমা করতে বলা হয়েছে। এই ১৬ লক্ষ টাকা অনামিকা পাবেন। এদিন ববিতার উদ্দেশে বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আপনিই ভুল করেছেন। আপনাকে শাস্তি পেতে হবে। আপনার বিরুদ্ধে আমি কড়া পদক্ষেপ নিতে পারতাম, কিন্তু নিচ্ছি না।
আরও পড়ুন: Murshidabad | অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের বচশায় প্রাণ হারালেন মুমূর্ষু রোগীর
উল্লেখ্য, ববিতা নন, চাকরির প্রকৃত দাবিদার তিনি, এই দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনামিকা। তাঁর দাবি ছিল, ফর্ম পূরণের সময় ববিতা লিখেছিলেন যে তিনি স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ পেয়েছেন। পাশাপাশি শতাংশের হিসাবে ৬০ শতাংশ পেয়েছেন। যদিও হিসাব করে দেখা গিয়েছে, শতাংশের হিসাবে তা ৬০ শতাংশের কম। অনামিকার আরও দাবি, কেউ যদি ৬০ শতাংশ বা তার বেশি পান তাহলে তিনি ৮ নম্বর পাবেন। আর কেউ যদি ৪৫ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ পান তাহলে তিনি ৬ নম্বর পাবেন। তাহলে হিসাব অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে ববিতার প্রাপ্য নম্বর ৩৩ এর পরিবর্তে ৩১ হওয়া উচিত এবং মোট নম্বরও ৭৭ এর পরিবর্তে ৭৫ হওয়া উচিত।
অনামিকার দাবি, প্রাথমিকভাবে যে ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশিত হয়েছিল, সেখানে ববিতার নাম ক্রমতালিকায় ২০ নম্বরে ছিল এবং অনামিকা ছিলেন ২১ নম্বরে। পরে মন্ত্রী কন্যা অঙ্কিতার নাম বেআইনিভাবে ১ নম্বরে ঢোকানোর পর ববিতা ২১ এবং অনামিকা ২২ নম্বরে চলে যান বলে মামলায় দাবি করা হয়। এই মামলা চলাকালীন অঙ্কিতার থেকে পাওয়া প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।