মুর্শিদাবাদ: টাকার অভাবে অ্যাম্বুল্যান্স (Ambulance) ভাড়া করতে পারেননি অসহায় বাবা। পাঁচ মাসের সন্তানের মৃতদেহ ব্যাগে করে নিয়ে যান তিনি শিলিগুড়ি থেকে কালিয়াগঞ্জে। তার জের কাটতে না কাটতেই ফের অ্যাম্বুল্যান্স বিভ্রাট মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সালারে। দুই অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিবাদে প্রাণ গেল মুমূর্ষু রোগীর। বিরোধীদের অভিযোগ রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে সম্প্রতি এই দুই ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। কালিয়াগঞ্জের (Kaliyaganj) ঘটনার পর সালারের এই বিভ্রাট নিয়েও নবান্ন (Nabanna) মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে।
মাধাইপুরের বাসিন্দা চাঁদতারা বিবি দীর্ঘ ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে সালার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা পর তাকে রেফার করে কলকাতার হাসপাতালে। তারপর চাঁদতারা বিবিকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে গেলে দুই অ্যাম্বুলেন্স চালকের বচসা শুরু হয়। অন্যান্য অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা বলেন ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের পরে লাইনে আছে এই অভিযোগ তুলে পথ আটককে দেয়। এর থেকে চালকদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। রোগীর পরিবারের লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদের ওপর চড়াও হয় জিয়ারুল সেখ, আরিফ সেখ ও সানি সেখ নামের তিন অ্যাম্বুলেন্স চালক। বহুক্ষণ অ্যাম্বুলেন্সে আটকে থেকে চিকিৎসা না পেয়ে মাঝরাস্তায় প্রাণ গেল রোগীর।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh | Kurmi | আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে দিলীপ ঘোষের কুশপুত্তলিকা দাহ কুড়মিদের
ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের ছড়িয়েছে এলাকায়। মৃত চাঁদতারা বিবির পরিবারের পক্ষ থেকে তিন অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে সালার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছয় সালার থানার পুলিশ। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে দোষীদের তল্লাশি শুরু করেছে সালার থানার পুলিশ।
মুর্শিদাবাদের সালারের ঘটনায় এবার অ্যাম্বুলেন্স চালকদের বিরুদ্ধে আরও কড়া রাজ্য। অ্যাম্বুলেন্স চালকরা রোগীকে না নেওয়ার জন্য ব্লক মেডিক্যাল অফিসারকে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ রাজ্যের। কোন চালক এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন তার নাম না জানা গেলেও গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন এই ঘটনায় ব্লক মেডিক্যাল অফিসারকে (BMOH) এফআইআর করতে বলেছেন।
উল্লেখ্য, রবিবার টাকার অভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে মৃত শিশুকে ব্যাগে করে শিলিগুড়ি থেকে কালিয়াগঞ্জে নিয়ে আসেন অসহায় বাবা। এমনকি ১০২ নম্বরে ফোন বিনামূল্যে পরিষেবাও মেলেনি। চিকিৎসক ও মেডিকেল সুপারকে আর্জি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। শেষে নিজের পাঁচ মাসের মৃত শিশুকে ব্যাগে করে কালিয়াগঞ্জে ফেরেন অসীম দেবশর্মা।