সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে, বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে অতিবর্ষণ ও বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে এই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যার জেরে শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে প্রায় ১৯ জন মানুষ মারা গেছেন। এর সঙ্গে ধান ও সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়। যার ফলে ধান ও সবজি কৃষকদের মাথায় হাত। বিভিন্ন কৃষকরা মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এবছর চাষবাস শুরু করেছিলেন, কিন্তু এই বন্যার জন্য তাদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফলে সারা বছর কিভাবে চলবে সেই চিন্তায় ঘুম ছুটেছে কৃষকদের।৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়েছিলেন এক এক জন কৃষক। কিন্তু বন্যার ফলে সব চারা গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। জেলার কিছু কিছু জায়গায় জল নেমে গেলেও সবজি গাছ মরতে বসেছে। যার ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছেন কৃষকরা। আর এই ক্ষতি থেকে একমাত্র বাঁচার উপায়, যদি সরকার কোনও সাহায্য করে। এমনই দাবি করেছে কৃষক প্রফুল্ল দাস, নিখিল চৌধুরী।
গত জুলাই মাসের শেষে পরপর তিন দিনে, একনাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের দেওয়া হিসেব অনুসারে, ২৮, ২৯ ও ৩০ জুলাই এই তিন দিনে জেলায় ২৪৫.৪মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মেদিনীপুর সদর ও ঘাটাল মহকুমা এই অতিবৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে। কৃষি দফতরের হিসেব অনুসারে, জেলার এই দুই মহকুমায় ১১টি ব্লক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তবে ৩টি ব্লকে জল কমে গেলেও মেদিনীপুর সদর ও ঘাটাল মহকুমার ৮টি ব্লকের অবস্থা খুবই খারাপ। জেলার এই ৮টি ব্লকে ৪৪ হাজার ২৩৫হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যার জলে। সেই সঙ্গে জেলার সবজি চাষ ভারি বৃষ্টির জেরে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সদ্য লাগানো ধান চাষের জমিতে কয়েকদিন ধরে জল জমে থাকায় আমন ধানের গোসল নষ্ট হয়েছে। সেই সঙ্গে ধানের বীজতলা, পাট, বাদাম চাষেরও ক্ষতি হয়েছে।