নয়াদিল্লি: রবিবার ঢাকায় (Dhaka) ভারতীয় হাইকমিশনের (Indian High Commission) দিকে এগিয়ে যাওয়া বিএনপির (BNP) বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদী পদযাত্রা আটকে দিল পুলিশ। রামপুরায় ছাত্র-যুব-স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিলের পথ আটকাল পুলিশ। বাংলাদেশের সময় দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ রামপুরা ব্রিজের কাছে পদযাত্রা আটকানো হয়। এরপর দলীয় নেতাকর্মীরা রামপুরা ব্রিজের কাছে বিক্ষোভ অবস্থান করেন। সেখানে ‘বিদেশ আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নয়’- লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। ওই পদযাত্রায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি নেতৃত্ব দেন। এছাড়া বিএনপির সংগঠন যুব দলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব হাজির ছিলেন। আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হয়। সংগঠনের কর্মীরা এদিন নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসা শুরু করেন সকাল ১০ টা থেকে। সমাবেশ করার পর তাঁরা ভারতীয় হাইকমিশনের দিকে রওনা দেন। পুলিশ আটকালে সেখান থেকে একটি প্রতিনিধি দল ভারতীয় হাইকমিশনে স্মারকলিপি জমা দিতে যায়।
উল্লেখ্য, গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে বিক্ষোভের জেরে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে আসার পর থেকে সে দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, মারধর, হুমকি, ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে ইসকনের প্রাক্তন সদস্য সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর থেকে ভারতবাসীর সঙ্গে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা গিয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাস সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে সমাবেশ করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সংগঠনকে ভারত বিরোধী বক্তব্য পেশ করতেও দেখা যায়। অভিযোগ, বাংলাদেশে কট্টরপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত এখন। ভারতেও বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনুস সরকারের আমলে সেখানে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। ভারত সরকারও একাধিকবার সে দেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ঢাকাকে বার্তা দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব দেন যেন রাষ্ট্রসঙ্ঘে দরবার করে সেখানে শান্তিসেনা পাঠানো হয়। অভিযোগ, তারই মধ্যে সে দেশে সক্রিয়তা বাড়াতে শুরু করেছে পাকিস্তান। এই প্রেক্ষিতে সোমবার একদিনের ঢাকা সফরে যাচ্ছেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম ভারতের বিদেশ সচিব সে দেশে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে শনিবার ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম অভিযোগ তুলেছেন, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশের অভিযোগ এই প্রসঙ্গে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম অতিরঞ্জিত করছে। উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক শে দেশের জন্মসূত্রে বাঁধা। ভারতের সাহায্যেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের নিবিড় সম্পর্ক। ভারত বিভিন্ন বাংলাদেশের উন্নয়নে সাহায্য করেছে। পড়শি দুই দেশের অনেকেই অবশ্য মত ব্যক্ত করেছেন, দ্রুত এই সমস্যার নিরসন হোক।
আরও পড়ুন: কুকুর এবং মানুষের সম্পর্ক ১২ হাজার বছরেরও পুরনো, গবেষণায় নতুন তথ্য
দেখুন অন্য খবর: