Wednesday, June 25, 2025
HomeScrollAajke | কল নয়, বিজেপি এই বাংলায় এখন মিসকলে চলছে
Aajke

Aajke | কল নয়, বিজেপি এই বাংলায় এখন মিসকলে চলছে

আগামী ২০২৬-এ ৫০ লক্ষ পার করাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ

Follow Us :

হালকা শীতের সকাল, উনুন ধরানো হয়েছে, বেগুনি ভাজা শুরু হবে, অন্য আর একটা উনুনে চা বসানো হয়েছে, বাচ্চারা খেলতে ব্যস্ত, বউ মা দিদি কাকিরা কড়াইশুটি ছাড়াতে ব্যস্ত, কেউ কেউ মাছের পিস করা তদারকি করছেন। অন্যদিকে বেশ কয়েকটা চেয়ারে কিছু লোকজন বসে, একজন বক্তৃতা দেওয়ার মতো হাত-পা নাড়াচ্ছেন। একজন ছবি তুলছেন। এই ছবিটা খুব জরুরি, দলের বুথ সভাপতির নির্বাচনের ডকুমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হবে। বোসবাবুর মেয়ের বিয়ে, নেতা এসে মেয়ে জামাইকে আশীর্বাদ দেওয়ার পরে ফোন বের করে মিস কল দেওয়া শেখাচ্ছেন, সে ছবি তোলা হল, ক্যাপশন– নেতা বেরিয়েছেন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে। সে অভিযান অবশ্য সেদিনে তারপর ফিশ ব্যাটার ফ্রাই থেকে মাটন কষা হয়ে নতুন গুড়ের রসগোল্লাতে শেষ হয়েছিল। হ্যাঁ, আমি বিজেপি দলের কথাই বলছি। দিল্লি থেকে কড়া নির্দেশ এসেছে, সদস্য অভিযানে যাচ্ছি বললেই হবে না, বুথ সভাপতি নির্বাচন হয়েছে বললেই হবে না, রীতিমতো প্রমাণ থাকতে হবে, যাকে বলে ডকুমেন্টেশন। প্রমাণ সমেত রিপোর্ট দাখিল করতে হবে। ৫০০টা সদস্য করুন, তবে তো আপনি বুথ কমিটিতে থাকতে পারবেন। কিন্তু ৫০০? সে কি সহজ কথা, শালি পর্যন্ত মুখের ওপরে বলে গেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নেওয়ার পরে মা কালীর দিব্যি গেলেছি, অমন পাপ করতে পারবনি কো। তাহলে ৫০০টা সদস্য জুটবে কোত্থেকে? মিসকল, মিসকল দিয়ে সদস্য বানাও। সেটাই আজকে বিষয় আজকে, কল নয়, বিজেপি এই বাংলায় এখন মিসকলে চলছে।

একটু ইতিহাসে ফেরা যাক, বাংলাতে বিজেপির আদত ভোট মোটামুটি হলে ৮-৯ শতাংশ আর খুব ভালো হলে ১৪-১৫ শতাংশ, খারাপ হলে ৫-৬ শতাংশ। এটাই আসলে বিজেপির মার্কশিট। তো ২০১১-তে এ রাজ্যে কারা লড়ছে, সিপিএম আর তৃণমূল, সঙ্গে কিছু দুধুভাতে দলও ছিল। তো সিপিএম হেরে গেল, তৃণমূলের ভোট ৩৯ শতাংশ, সিপিএমের ৩০ শতাংশ। ওই যে গৌতম দেব বলেছিলেন মাত্র ৪ লক্ষ ভোটের ফারাক, ও আমরা সামলে নেব। সে অবশ্য অন্য প্রসঙ্গ, গৌতম দেব এবং বাওয়াল এই শীর্ষক আলোচনাতে একদিন সে কথা বিশদে বলব। কিন্তু দেখুন সত্যিই সেদিন ৯ শতাংশ ভোটের তফাৎ। আর বিজেপি? ৪ শতাংশ। তো এই রাজ্যে তৃণমূল আর সিপিএমই ছিল।

আরও পড়ুন: Aajke | অভয়ার মা-বাবা নিজেদের হাসির খোরাক করে তুলছেন কেন?

কিন্তু ২০১৬-তে তৃণমূল ৪৫ শতাংশের সামান্য কম আর সিপিএম বাম জোট ৩৯ শতাংশ, বিজেপি? ১০ শতাংশ। কিন্তু এই সময়েই সিপিএম-এর তলার সারির কর্মীরা তাদের রাজনৈতিক বোকামো, অপরিপক্কতা, হঠকারিতার শিকার হল, ২০১৯-এর লোকসভাতে একটা স্লোগান উঠে এল আগে রাম, পরে বাম। তলার কিছু নেতাদের মনে হয়েছিল তৃণমূল তো যাক, তারপরে আমরা দখল নেব বাংলার আর তৃণমূলের এক আগ্রাসী নীতির সামনে পড়ে মার খেতে খেতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাম কর্মী সমর্থকেরা বিজেপির দিকে ঝুঁকলেন। তৃণমূল ৪৩ শতাংশ ভোট পেল, কিন্তু বিজেপি এক বিরাট লাফ দিয়ে ৪০ শতাংশ ভোট, ১৮টা আসন আর বাম কংগ্রেস মিলে ১২ শতাংশের মতো ভোট পেল। মানে তৃণমূল-বিরোধী বাম ভোট লক স্টক ব্যারেল চলে গিয়েছিল বিজেপির দিকে। কাজেই তৃণমূলের মধ্যে এক চরম উচ্চাকাঙ্ক্ষী কাঁথির খোকাবাবু মনে করলেন, ব্যস, এধারের পালা শেষ, তিনি অন্যধারে গেলেন। এক কাগজের বাঘ, এক ফোলানো বেলুনকে মনে করা হল বিজেপির শক্তি। এবং তারপরে আবার বিজেপির ভোট কমছে। কমবেই কারণ তাদের সংগঠন তো নেই। তৃণমূলের চাপে যাঁরা বিজেপিতে গেলেন তাঁদের কেউ তো বিজেপির কর্মী নন, তাদের এক অংশ কর্মী হয়ে উঠলেন বটে, যাঁরা নরেন্দ্র মোদি জিন্দাবাদ বলার পরেই ভুলে ইনকিলাব জিন্দাবাদও বলে বসেন। কিন্তু সংগঠন কই? আর সংগঠন না থাকলে ওই বাম থেকে রামে যাওয়া ভোট কমবে, তাদের এক অংশ তৃণমূলেও আসছেন, ওদিকে নব্য বিজেপিদের চাপে আদি বিজেপিরা দল ছাড়ছেন। এরমধ্যে দিল্লি থেকে ফতোয়া ১ কোটি সদস্য করতে হবে। ১৭ কোটি ভোটারের ১ কোটি সদস্য, বিরাট ব্যাপার। তো জানা যাচ্ছে প্রভূত জল মিশিয়েও সেই সংখ্যাকে ৫০ লক্ষের উপরে কিছুতেই নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। তারপরে ঘরশত্রু বিভীষণও কি কম, দিল্লিতে গিয়ে লাগিয়ে আসছে, ওই দেখুন ওখানে জল, সেখানে জল, আর এই লাগানো ভাঙানোর কাজে মূলত নেমেছেন আদি বিজেপির ক্যাডারেরা, তাঁরাই দেখিয়ে দিচ্ছেন এমনকী কাঁথির খোকাবাবুর অনুগামীরাও নাকি জলে দুধ মিশিয়েছেন। সে খবর দিল্লিতেও গেছে। তাঁরা জানিয়েছেন কেবল সদস্য অভিযানে বের হয়েছি বললেই হবে না, তার ডকুমেন্টেশন চাই, প্রমাণ চাই। তাই বিয়েবাড়ির বর-বউ থেকে অন্যপ্রাশনের অনুষ্ঠানে হাজির বিজেপি নেতারা, হাতে সেলফি স্টিক। সদস্য বাড়াও, পদ বাঁচাও। চায়ের দোকান থেকে পিকনিক যে কোনও জায়গাতে গোটা ২০-২৫ মানুষ হলেই একজন দেশের সমস্যা বোঝাচ্ছেন অন্যজন ছবি তুলছেন, সেটাকেই বুথ কমিটির মিটিং বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেসব করে হাফওয়ে মার্কে কোনওভাবে আসা গেছে। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, বিজেপি তাদের সদস্য বাড়ানোর জন্য, সংগঠন বাড়ানোর জন্য নানান অভিযান, নানান প্রোগ্রাম নিচ্ছেন, কিন্তু তাঁদের দিল্লির নেতাদের দেওয়া টার্গেটের অর্ধেকও হয়নি, কেন হচ্ছে না? বিজেপির সংগঠন কেন বাড়ছে না?

শোনা গেল, এখন সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর নয়া উপায় বের করে ফেলেছেন কর্মীরা, সুলভ শৌচালয়, বাসের গায়ে, লোকাল ট্রেনের কামরায়, স্টেশনের টয়লেটে লেখা থাকছে, পূর্ণিমা, পদ্ম, লীলা, শীলা ইত্যাদি নাম আর তার পাশেই সেই মোবাইল নাম্বার। যা টিপলেই শোনা যাচ্ছে, ধন্যবাদ, আপনি আজ থেকে বিজেপির সদস্য হিসেবে পরিচিত হলেন। আসুন আমরা নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নতুন ভারত গড়ে তুলি। দেখা যাক এই পদ্ধতিতে কতদিনের মধ্যে বঙ্গ বিজেপি তার লক্ষ্য এক কোটি সদস্য সংখ্যা পার করতে পারে। জানতে আপনিও পারবেন, দিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদিজির বংগাল বিজেপি কো বধাই হো বলবেন, খবরের কাগজে প্রথম পাতায় তা থাকবেও। কিন্তু এসবের পরে নাম ছাপানো যাবে না, বলা যাবে না এই কড়ারে এক রাজ্য নেতা বললেন সদস্য সংখ্যা ১ কোটি নয়, আগামী ২০২৬-এ ৫০ লক্ষ পার করাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Donald Trump | NATO বৈঠকে ট্রাম্পকে চাইছে ইউরোপ, বিশ্ব রাজনীতিতে এ কোন খেলা?
00:00
Video thumbnail
Weather Update | প্রবল দুর্যোগের পূর্বাভাস, ভাসবে কোন কোন জেলা? দেখুন বড় আপডেট
00:00
Video thumbnail
Donald Trump | রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে আগ্রহ ট্রাম্পের, আবার কোন ফন্দি?
00:00
Video thumbnail
Iran | মা/রের চোটে ছালচামড়া গুটিয়ে গেল ইজরায়েলের, পাশে নেই ট্রাম্প,মাথা খারাপ হয়ে গেল নেতানিয়াহুর?
00:00
Video thumbnail
Good Morning Kolkata | সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবর, দেখুন একনজরে সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Iran | কীসের যু/দ্ধ বিরতি? আরও মা/রব, জানিয়ে দিলেন খামেনি,কী করবে ইজরাইল?
03:12:26
Video thumbnail
Donald Trump | NATO বৈঠকে ট্রাম্পকে চাইছে ইউরোপ, বিশ্ব রাজনীতিতে এ কোন খেলা?
09:24
Video thumbnail
B2 Spirit | যুদ্ধে আমেরিকার বিপরীত মেরুতে তুরস্ক, বিমান হানার পাইলটদের মন মজেছে টার্কি স্যান্ডউইচে
03:58:46
Video thumbnail
Weather Update | প্রবল দুর্যোগের পূর্বাভাস, ভাসবে কোন কোন জেলা? দেখুন বড় আপডেট
02:51
Video thumbnail
Space News | রাকেশ শর্মার পর প্রথম কোনও ভারতীয়র মহাকাশে পাড়ি, দেখুন ভিডিও
01:50