Sunday, June 1, 2025
HomeScrollFourth Pillar | শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি
Fourth Pillar

Fourth Pillar | শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি

আমাদের ঐক্য ও দৃঢ় সংকল্পের জোরে আমরা এই সংগ্রামে সফল হবই

Follow Us :

ওয়েবডেস্ক- দুটো ভিন্ন বিষয়কে একসঙ্গে, এক ব্রাকেটে রেখে এক সমার্থক শব্দ গড়ে তোলার প্রয়াস আজ নয়, বহুকালের। ইনফ্যাক্ট, সেটাই প্রাচীনতম রাষ্ট্রব্যবস্থার স্বরূপ। যেখানে বলা হয়, দেশ মানেই দেশের সরকার, দেশের সরকার মানেই দেশ। এমনকি সেটাকে রাষ্ট্রনায়কের সঙ্গেও মিলিয়ে দেবার চেষ্টা করেন অনেকে। সেই কবে থেকেই রাজারা উপাধি নিতেন ভারত অধিপতি, সম্রাট-এ-হিন্দ। আমাদের দেশেই কেবল নয়, পৃথিবীর সব দেশেই এই রেওয়াজ, রীতি, আইন (Law) কানুন ছিল।

কাজেই দেশ (India) আর দেশের নায়ক, দেশের সম্রাট হয়ে উঠেছিলেন এক ও অভিন্ন। কিন্তু প্রজাতান্ত্রিক ধারণা আসার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ভাবনার বিপরীতে এক ভাবনা গড়ে উঠতে থাকে, যেখানে দেশ আর দেশের সরকার এক নয়, দেশপ্রেম আর সরকার প্রেম এক নয়। তাই সরকারের প্রত্যেক কথাকে সন্দেহ করব, যাচাই করব, ভুল হলে তাকে সমালোচনা করব, তার বিরোধিতা করব, হাজারবার করব। কিন্তু দেশপ্রেম, তা নিঃশর্ত, দেশপ্রেমের কোনও ভালমন্দ হয় না, হয়না বলেই প্রত্যেক দেশের দেশপ্রেমী তার নিজের দেশকে শ্রেষ্ঠ দেশ বলে মনে করে, সকল দেশের সেরা সে যে আমার জন্মভূমি।

সেইরকম একটা জায়গা থেকেই দেশ, আমাদের মাতৃভূমির এতটুকু অপমান, আমার সহনাগরিকদের গায়ে এতটুকু আঁচ পড়লে তার বিরুদ্ধে এক ঐক্যবদ্ধ কন্ঠস্বর আমরা শুনতে পাই। সেখানে আমরা এক সুরেই বলি, ‘মা গো, আমরা তোমার শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে লড়তে জানি, তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি।’ আজ শোনাব তেমন এক কথা, স্বাধীন ভারতবর্ষে যুদ্ধের কথা।

চীন ভারত যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নেহেরু বমডিলার পতনের পরে রেডিওতে ভাষণ দিয়েছিলেন, আজ সেটাই পড়ে শোনাব। ২২ শে অক্টোবর, জহরলাল নেহেরু রেডিওতে বলছেন, সীমান্তে যে ভয়াবহ হুমকি এসে দাঁড়িয়েছে, তা উপলব্ধি করার এখনই সময়। এই হুমকি আমাদের জনগণের স্বাধীনতা ও দেশের সার্বভৌমত্বকে নষ্ট করতে চায়। আমি জানি কোনও শক্তিই আমাদের এত বড় ত্যাগের পর অর্জিত স্বাধীনতাকে নষ্ট করতে পারবে না। তবে আমাদের স্বাধীনতা ও দেশের অখণ্ডতা রক্ষার তাগিদে মনোবল জোগাতে হবে। আমি নিশ্চিত, আমাদের ঐক্য ও দৃঢ় সংকল্পের জোরে আমরা এই সংগ্রামে সফল হবই। আমাদের জনগণের স্বাধীনতা এবং দেশপ্রেমের তুলনায় আর কোনো বিষয় এত বড় নয়; প্রয়োজনে বাকি সবকিছুই ত্যাগ করতে হবে।

গত পাঁচ বছর ধরে লাদাখ সীমান্তে চীনের ধারাবাহিক আগ্রাসন চলছে। পূর্বের শান্ত নেফা সীমান্তেও কোনো ধরনের হুমকি ছিল না; অথচ আমরা উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজছিলাম ঠিক সেই সময়ে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে নেফা সীমান্তে নতুন করে চীনা আগ্রাসন শুরু হল। উত্তেজনা কমানোর এই অদ্ভুত উদ্যোগই চীনা সরকারের স্বভাবকে প্রকট করে তুলেছে। শান্ত নেফা সীমান্তে বিরাট সংখ্যার সেনাবাহিনী নিয়ে এক ব্যাপক প্রস্তুতির পর চীনা বাহিনী হঠাৎ হামলা চালিয়েছে। আমাদের সেনাবাহিনী প্রথমে কিছুটা পিছনে সরে এসেছে, কারণ চীন ভারি আর্টিলারি ও বন্দুক নিয়ে আক্রমণ করেছিল। এই সাহসী অবস্থানে দাঁড়িয়ে আমাদের অফিসার ও সৈনিকরা দমনের চেষ্টা করেছে; তাঁদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। হয়তো আগামী দিনের লড়াই আরও কঠিন হবে, কিন্তু একটি কথা নিশ্চিত: শেষ বিচারে জয় আমাদের পক্ষেই আসবে।

ভারতের মতো স্বাধীনতাপ্রিয় দেশ যখন তার মাতৃভূমির অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে, তখন তার পরিণতির কথা ভেবেই আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক বিশাল শক্তিশালী এবং নির্লজ্জ প্রতিপক্ষ। তাই আমাদের শক্তি ও সামর্থ্য সবদিক দিয়ে বাড়াতে হবে; এই সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, তাই মানসিক ও শারীরিকভাবে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে। নিজেদের ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখুন; আমি নিশ্চিত এই বিশ্বাস ও প্রস্তুতির জোরেই আমরাই বিজয়ী হব। অন্য কোনও ফলাফল ভেবে দেখাই যাচ্ছে না।

আমাদের দৃঢ় মনোবল ধরে রাখতে হবে যেন এই আগ্রাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে পারি। মনোবল জোরদার করে দেশের সমস্ত শক্তি একাগ্র করতে হবে। শান্তিকালে যেসব পন্থা কাজে এসেছে, এখন যুদ্ধের জন্য সেগুলো পরিবর্তন করতে হবে যাতে দ্রুত ফল পাওয়া যায়। সমস্ত উপায় ব্যবহার করে আমাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মোদিজির ইউ টার্ন বা পাল্টি খাওয়াটা চমৎকার

কিন্তু কেবল সামরিক শক্তি যথেষ্ট নয়; তা আমাদের শিল্প ও উৎপাদনশক্তির উপর নির্ভর করবে। এই মুহূর্তে সব ধরনের ক্ষেত্রেই উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। আমি সমস্ত শ্রমিকদের আহ্বান জানাই, কোনো অবস্থাতেই ধর্মঘট বা উৎপাদন ব্যাহতকারী কাজে জড়াবেন না। দেশের প্রয়োজনে উৎপাদন শুধু কারখানায় নয়, মাঠেও চালিয়ে নিতে হবে। এই বিপজ্জনক সময়ে যে কোনো অজাতীয় বা অবাস্তব কাজ সহ্য করা হবে না। দেশের উপর বিরাট দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে; যাতে সরকারি বন্ড কেনার মাধ্যমে উৎপাদন ও প্রতিরক্ষা খরচ সহজে মিটিয়ে নেওয়া যায়। মূল্যবৃদ্ধি যেন না ঘটে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।

যারা এই দুর্দিনে মুনাফা তুলতে চাইবে, তারা দেশবিরোধী এবং তাদের এই কাজ দেশবিরোধী, তারা আসলে দেশ কে আঘাত করছে। আমরা তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাঝপথে আছি। কোনওভাবেই এই পরিকল্পনা বাতিল বা এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছেড়ে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজন হলে কিছু ছোটখাট পরিবর্তন আনা যেতে পারে, কিন্তু এর প্রধান প্রকল্পগুলো চালিয়ে যেতে হবে। কারণ এই প্রকল্পগুলো সফল হলে শুধু বর্তমান সংকটেই নয়, ভবিষ্যতেও দেশ শক্তিশালী হবে। জনগণ আরও অনেক কিছু করতে পারে; সে সম্পর্কে আমি পরবর্তীতে বলব। তবে আপাতত প্রধান কাজ হল জাতীয় একতা গড়ে তোলা এবং দেশকে স্বাধীন করতে সবাইকে উৎসর্গ করা। এই কাজে কোনও সময়সীমা নেই; যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা বিজয় অর্জন না করি, ততক্ষণ লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা অন্যের আগ্রাসন বা কর্তৃত্ব কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না।

এক্ষেত্রে প্যানিকের কোনো দরকার নেই, কারণ আমাদের পিছনে দাঁড়িয়ে আছে সমগ্র জাতির একাত্ম শক্তি। চলুন, আমরা সবাই গর্বের সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং সেই শক্তি আমাদের স্বাধীনতা ও দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় ব্যয় করি। আমাদের এই সংকটকে যতটা গভীরতার সঙ্গে নেব, ততটাই ভালো; দৃঢ় মন নিয়ে বিশ্বাস রাখতে হবে যে আমাদের লড়াই সঠিক পথে চলছে। গুজবে কান দেবেন না, দুর্বল মনের লোকদের কথা শুনবেন না। এই সময় আমাদের সকলের জন্য পরীক্ষা-পরীক্ষার পর্যায়; নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। সম্ভবত আমরা কিছুটা রিলাকট্যান্ট, অসতর্ক হয়ে পড়ছিলাম এবং আমাদের প্রতিরক্ষা সমেত অনেককিছুই মজবুত আর টেকসই ভেবেছিলাম।

কিন্তু স্বাধীনতা কখনওই নিঃশর্তে আসে না; স্বাধীনতা রক্ষায় সবসময় সতর্কতা, শক্তি এবং কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন। আমি দেশের প্রতিটি নাগরিককে আহ্বান জানাই—ধর্ম, দল বা গোষ্ঠী নির্বিশেষে—আমাদের এ সংগ্রামে একে অন্যের হাত ধরতে। আমার, আমার সরকারের আমাদের জনগণ এবং দেশের ভবিষ্যতের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। হয়তো এই কঠিন সময়ে আমরা আরও দৃঢ় হলাম; এই সময়টা আমাদের পরিশীলিত করারই একটা পরীক্ষা ছিল।

আমরা নিরপেক্ষ নীতির পথে অটল আছি এবং সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। এই নীতির প্রতি আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে এবং বর্তমান সংকটেও আমরা আমাদের মূল নীতিতে টিকে থাকব। এমনকি এই সংকটও আমরা ঐ নীতি বজায় রেখে সাফল্যের পথে অতিক্রান্ত করব। সবশেষে, আপনাদের সবাইকে শুভকামনা জানাই। সামনে যা কিছুই হোক না কেন, মাথা উঁচু করে থাকব এবং আমাদের দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখব। জয় হিন্দ!
হ্যাঁ সেদিন নেহেরু বলেছিলেন বা বলা ভাল বুঝিয়েছিলেন, আমরা শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি।

দেখুন ভিডিও-

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Anubrata Mondal | থানায় হাজিরা দিলেন না অনুব্রত! আজই বড় পদক্ষেপ?
00:00
Video thumbnail
Amit Shah Speech Live | সিএফএসএলের নতুন ভবন উদ্বোধনে বক্তব্য রাখছেন অমিত শাহ, দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Dilip Ghosh | কেষ্টর মুখের বুলি থেকে অমিত শাহের সফর আর জামাই ষষ্ঠী, দিলীপ আছেন খোশ মেজাজে
00:00
Video thumbnail
Amit Shah | Netaji Indoor Stadium | অমিত শাহের সভা শুরুর আগে নেতাজী ইন্ডোরে কী অবস্থা? দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Miss World | ‘এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না…’, মিস ওয়ার্ল্ড হওয়ার পর কী বললেন ওপাল সুচাতা চুয়াংস্রি?
50:38
Video thumbnail
Good Morning Kolkata | সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবর, দেখুন একনজরে সরাসরি
01:17:35
Video thumbnail
Amit Shah | BJP | আজ কী বার্তা দেবেন অমিত শাহ?
01:16:13
Video thumbnail
Sheikh Hasina | এই প্রথম সরাসরি বক্তব্য রাখছেন শেখ হাসিনা, দেখুন Live
03:24:02
Video thumbnail
Dilip Ghosh | কেষ্টর মুখের বুলি থেকে অমিত শাহের সফর আর জামাই ষষ্ঠী, দিলীপ আছেন খোশ মেজাজে
04:45
Video thumbnail
Eco ইন্ডিয়া | সবুজ এবং সমন্বয় ভবিষ্যৎ গড়তে দৈনন্দিন জীবনে আমার কী কী রদবদল করতে পারি? জানুন
26:02