Monday, June 16, 2025
HomeScrollঅদিতির সঙ্গে সাদা কালো | এক দেশ এক ভোট, দেশ জুড়বে? নাকি...
Aditir Songe Sada Kalo

অদিতির সঙ্গে সাদা কালো | এক দেশ এক ভোট, দেশ জুড়বে? নাকি দেশ ভাঙবে?

শিক্ষা এখন সবথেকে লুক্রেটিভ ব্যবসা

Follow Us :

যেমনটা রোজ করে থাকি, একটা বিষয়ের অবতারণা আর সেই বিষয়কে নিয়ে অন্তত দুটো ভিন্ন মতামতকে এনে হাজির করা, যাতে করে আপনারা আপনার মতটাকে শানিয়ে নিতেই পারেন, আবার আপনার বিরুদ্ধ মতটাকেও শুনে নিতে পারেন। পৃথিবীর সব্বাই যদি এক মতের হত, সব্বাই একই সুরে কথা বলত, কী বোরিং হত সেই পৃথিবী। কাজেই তর্ক বিতর্কে সাদা কালোর দ্বন্দ্বে নানান রং ভেসে উঠুক। মাও সেতুং বলেছিলেন, শত ফুল বিকশিত হোক, যত আগাছা নির্মূল হোক। তো ভনিতা ছেড়ে শুরু করি আজকের বিষয়। এক দেশ এক ভোট, যা নিয়ে সংসদ উত্তাল। মুখে আসছিল দেশ উত্তাল, কিন্তু একটু পরেই মনে হল আজ বাজারে গিয়ে ফুটপাথে যে মানুষজনকে সবজি বিক্রি করতে দেখেছি, বা কিনতে দেখেছি, বা আজ যাদেরকে দেখলাম মেট্রো রেলে ধর্মতলায় নামতে, বা ক্যানিং লোকালে যে মেয়েরা বাবুদের বাড়িতে কাজ সেরে রাতের শেষ লোকালে বাড়ি ফেরেন, তাঁদের কি ছুঁয়েছে এই ইস্যু? না ছোঁয়নি। আর এইখান থেকেই আলোচনাটা শুরু করা যায়। এই এক দেশ এক ভোট কি দেশ গড়বে? না দেশ ভাঙবে? প্রথম যুক্তিগুলো এই এক দেশ এক ভোট যাঁরা চান না, সেই বিরোধীদের।

তাঁদের প্রথম বক্তব্য হল, দেশের সামনে কি সমস্যা কম আছে? বেকারত্বের রেকর্ড, মূল্যবৃদ্ধির ভারে নুয়ে পড়া সংসার, কারও অসুখ করলে সেটা শরীরে পরে, মাথায় প্রথম ব্যথা ধরায়, জোগাব কোত্থেকে ডাক্তার আর ডায়াগোনস্টিক কোম্পানির খরচ? শিক্ষা এখন সবথেকে লুক্রেটিভ ব্যবসা। সেই দেশে আর কোনও কাজ নেই এনে হাজির করা হল একটা বিল, যা নাকি পাশ হলেও কবে লাগু হবে তাও কেউ জানেই না। কারণ এই বিলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে জনগণনা আর ডিলিমিটেশন। ২০২১-এ জনগণনা হওয়ার কথা, প্রথমে তা করোনার জন্য হয়নি, তারপরে হচ্ছে না কেন? হচ্ছে না কারণ জনগণনা করলেই জাতিগত জনগণনা করার প্রশ্নটা সামনে এসে যাবে, জাতিগত জনগণনা করলে দলিত, পিছড়ে বা অতিপিছড়ে বা ওবিসি ক্যাটাগরিতে কত মানুষ আছেন তা সামনে আসবে, তা সাধারণ হিসেবে ৭০ শতাংশের বেশিই হবে। কাজেই দাবি উঠবে সংরক্ষণ বাড়াও, সংরক্ষণ বাড়ালে বিজেপির কোর ভোট ব্যাঙ্ক, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় উচ্চ জাতির ভোট ব্যাঙ্ক ভেঙে চুরমার হবে। আবার না করলে দলিত, অতি দলিত বা অন্য পিছিয়ে পড়া জাতির ভোট বিজেপি পাবে না, আক্ষরিক অর্থেই ঘটি হারাবে। কেবল এটাই সমস্যা নয়, জনগণনা করলেই তাদের প্রতিশ্রুতি মতো এনআরসি-ও করতে হবে। বিজেপি জানে যে সারা দেশে আগুন জ্বলবে, সেটাও তারা অ্যাফোর্ড করতে পারবে না। এই দুই কারণে জনগণনা কবে হবে বা আদৌ হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। অন্যদিকে ডিলিমিটেশন। এই ডিলিমিটেশনের সমস্যা অনেক, প্রথম সমস্যা হল কিসের ভিত্তিতে ডিলিমিটেশন হবে? যদি তা জনসংখ্যার ভিত্তিতে হয়, তাহলে দক্ষিণের রাজ্য, আমাদের বাংলা, যেখানে উল্লেখযোগ্যভাবে জনসংখ্যা কমেছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে, সেসব জায়গাতে আসন কমে যাবে। অন্যদিকে গোবলয়ে আসন সংখ্যা বিরাটভাবে বেড়ে যাবে, যার ফলে গোটা দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতার ভরকেন্দ্র এক্কেবারেই গোবলয়ের ওপর এসে দাঁড়াবে। তাদের সাংসদ সংখ্যা বেশি হবে, তারাই সরকার তৈরি করবে, অন্যদিকে বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ করে, প্রচার চালিয়ে, জীবনযাত্রার মান বাড়িয়ে যারা জনসংখ্যা কমাল, তাদের রাষ্ট্রচালনা থেকে বঞ্চিত করা হবে। আর জনসংখ্যা ছাড়া ডিলিমিটেশনের অন্য কোনও মাপকাঠিই নেই। তার মানে দাঁড়ালটা কী? ডিলিমিটেশন আর জনগণনা দুটোই এখন দূর অস্ত, এদিকে এই দুটো না হলে এই এক দেশ এক ভোট আইন পাশ হলেও তা লাগু করা যাবে না যেমন লাগু হয় নি মহিলা সংরক্ষণ বিলটাও। তাহলে এই বিল এনে আসলে সরকার কী করতে চাইছে? তারা আসলে মানুষের দৃষ্টি ফেরাতে চায়, তাদের বিবেচনা বোধকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে চায়। এক দেশ এক ভোট তো ছিলই আমাদের দেশে, কিন্তু সরকার মাঝপথে ভেঙেছে, তখন ভেঙেছে, আজও ভাঙছে, আগামী দিনেও ভাঙবে। তারমানে আবার এক দেশ এক ভোট বলে কিছু চালু করা হলেও তা ধরে রাখা যাবে না। যদি না বছরের পর বছর রাজ্যে বা কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রাখার কথা ভাবা হয়। সেটা যদি হয় তাহলে তো দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোই উবে যাবে। এই হল বিরোধীদের বক্তব্য।

এবার আসুন দেখা যাক যাঁরা এই বিল আনলেন তাঁদের কী বক্তব্য। এই বিল আনা হয়েছে মূলত দুটো কারণে। এক হল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিপুল টাকা খরচ হয়, কেবল দেশের নয়, রাজনৈতিক দলেরও তার ১০ গুণ টাকা খরচ হয়। এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই তা আসে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে, তারা যা দেয় তার পঞ্চাশ গুণ তুলেও নেয়। সব মিলিয়ে দুর্নীতিও বাড়ে, দেশের টাকাও বরবাদ হয়। এক দেশ এক ভোট হলে সেই খরচ কমবে, দুর্নীতিও কমবে। অন্যদিকে দেশের মধ্যে হয় এখানে নয় সেখানে নির্বাচন হচ্ছে আর নির্বাচনী বিধি মেনে সেখানকার উন্নয়নের কাজ থমকে দাঁড়াচ্ছে, সেটা আর এক বিপদ। তাকিয়ে দেখুন এই লোকসভা শেষ হল তো পুরসভার ভোট, সেটা শেষ হল তো বাই ইলেকশন, শেষ হল তো পঞ্চায়েতের ভোট, সেটা শেষ হলে বিধানসভার ভোট, তারপরে আবার লোকসভার ভোট এসে যাবে। সরকার কাজটা করবে কখন? সারা বছর ধরে আমেরিকার ভোট হয়? জার্মানি, ফ্রান্সে হয়? হয় না। খেয়াল করুন সেই কবে বাইডেন নির্বাচিত হয়েছিলেন, আবার ভোট হল এই সেদিন। কিন্তু আমাদের দেশে যে কোনও প্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন লেগেই থাকে। কাজেই এক দেশ এক ভোট এক গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, হ্যাঁ তাকে প্রয়োগ করতে হলে অনেক ভাবনাচিন্তা করতে হবে, কী ভাবে করা যায় তা নিয়ে সম্মতিতে আসতে হবে, কিন্তু এই প্রশ্নকে এড়িয়ে গেলে চলবে না। আজ যদি বিল পাশ হয়, আজই তা লাগু হল না তো কী? ৫/৭/১০ বছর পরে লাগু হবে, মোদিজির সময় নয় তো অন্য কারও সময়ে লাগু হবে। এখনই লাগু হবে না বলে বা সেই যুক্তিতে তো নারী আসন সংরক্ষণ বিল তো নাকচ করে দেননি বিরোধীরা, তাহলে এটা নিয়ে এরকম কথা উঠছে কেন?

হ্যাঁ, এটাই হচ্ছে সরকার পক্ষের বক্তব্য। বিজেপি দলের বক্তব্য। এবার কোন যুক্তিটা আপনার মনে ধরে, মাথায় লাগে, দেখে নিন। তারপর সেই যুক্তিটা নিয়ে চলে যান কালোদার চায়ের দোকানে, আলোচনা হোক, তর্ক বিতর্ক হোক, ট্রোল আর কাঁচা খিস্তি করে লাভ নেই, নিজের যুক্তি দিন, আর অন্যের যুক্তি শুনুন, সেটাই সভ্য সমাজের নিয়ম। আজ আসি।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Iran-Israel|ইরানের মা/রে গুটিয়ে গেল ইজরায়েল, ইরাকের মার্কিন সে/নাঘাটিতে হা/ম/লা, ট্রাম্পের সুর বদল
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | ইজরায়েলকে ছি/ন্নভি/ন্ন করছে ইরান, এবার কী করল দেখুন
00:00
Video thumbnail
Donald Trump | Ali Khamenei | ইরানে মা/র খেয়ে সুর বদল ট্রাম্পের? গুটিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা?
00:00
Video thumbnail
Rekha Patra | সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখরা দলে দলে তৃণমূলে, এবার কি রেখা পাত্র?
00:00
Video thumbnail
Rekha Patra | সন্দেশখালির প্রতিবাদী মহিলারা তৃণমূলে, রেখা পাত্র কবে যোগ দেবেন? প্রবল জল্পনা
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel|ইরানের মা/রে গুটিয়ে গেল ইজরায়েল, ইরাকের মার্কিন সে/নাঘাটিতে হা/ম/লা, ট্রাম্পের সুর বদল
07:40
Video thumbnail
Ali Khamenei | Israel | ইজরায়েলকে গুঁ/ড়িয়ে দিতে কী করবে ইরান? বি/স্ফো/রক খামেনি
01:21:46
Video thumbnail
BJP | প্রবল ক্ষু/ব্ধ বিজেপি বিধায়করা, বনশলের সামনেই উগরে দিলেন ক্ষো/ভ, তারপর কী হল দেখুন
01:46:10
Video thumbnail
Donald Trump | Ali Khamenei | ভেস্তে গেল ইরান-মার্কিন আলোচনা, এরপর কী হতে পারে? দেখুন বড় আপডেট
01:56:51
Video thumbnail
Iran-Israel | ইজরায়েলকে ছি/ন্নভি/ন্ন করছে ইরান, এবার কী করল দেখুন
04:13