ঢাকা: ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’৷ প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দুই বাংলাতেই শোনা যায় গানটি৷ সেই বিখ্যাত একুশের গানের রচয়িতা আব্দুল গফফর চৌধুরীর জীবনাবসান হল৷ বৃহস্পতিবার সকালে লন্ডনের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি৷ দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি৷ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ৮৮ বছর৷ আব্দুল গফফরের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে তাবড় রাজনীতিকরা৷
বাংলাদেশের স্বনামধন্য ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আব্দুল গফফর চৌধুরী৷ লেখক হিসেবে যেমন তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল, তেমনই সাংবাদিক হিসেবে দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি৷ বাংলাদেশের প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘জয় বাংলা’-র প্রকাশনা শুরু হয় তাঁর হাত ধরেই৷ সময়টা ছিল ১৯৭১ সাল৷ তখন মুক্তিযুদ্ধ চলছে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে৷ বাংলাদেশের ইতিহাসের নানা ঘটনার সাক্ষী আব্দুল গফফর৷ এমন এক ব্যক্তির প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলাদেশ৷
১৯ মে শিলচর ভাষা শহীদ দিবসের দিনেই মৃত্যু হল আব্দুল গফফরের৷ ১৯৬১ সালের এই দিনই শিলচরের কাছারে নিরস্ত্র এবং নিরীহ বাংলা ভাষা প্রেমী মানুষের উপর নির্বিচারে পুলিস গুলি চালিয়েছিল৷ তাতে মৃত্যু হয় বিশ্বের প্রথম মহিলা মাতৃভাষা শহীদ কমলা ভট্টাচার্য-সহ ১১ জন৷ এখনও প্রতি বছর অসমে এই দিনটি ভাষা শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়৷
বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস মিনিস্টার আশিকুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি৷ ছেলের সঙ্গেও কথা হয়েছে।’ ১৯৭৪ সাল থেকে লন্ডনে বসবাস করলেও মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে তাঁর কলম সোচ্চার ছিল বরাবর৷ প্রবাসে থেকেও ঢাকার পত্রিকাগুলোতে তিনি যেমন রাজনৈতিক ধারাভাষ্য আর সমকালীন বিষয় নিয়ে একের পর এক নিবন্ধ লিখে গিয়েছেন, তেমনি লিখেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, স্মৃতিকথা ও প্রবন্ধ। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ৷
আরও পড়ুন: Anubrata Mandol: নিজাম প্যালেস থেকে এসএসকেএম, হল কী কেষ্টর?