কলকাতা: তৃণমূল যে দাবিতে আন্দোলন করছে, তার যৌক্তিকতা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C. V. Ananda Bose) মেনে নিয়েছেন। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের তিন সাংসদ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নির্দেশে দুই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্রে এবং রাজ্যের কৃষি ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার শনিবার দার্জিলিংয়ে বোসের সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে কল্যাণরা বলেন, রাজ্যপাল আমাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক চাপ থাকলে তাঁর পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে অনেক আগেই বিষয়টি জানিয়েছেন।
কলকাতায় ধরনা মঞ্চ থেকে অভিষেক বলেন, কল্যাণ দা-এর সঙ্গে আমার এই নিয়ে কথা হয়েছে। রাজ্যপাল আমাদের দাবি ন্যায্য এবং বৈধ বলে মেনে নিয়েছেন। ২০ লাখ লোক যে একশো দিনের কাজ করে টাকা পাননি, তাও রাজ্যপাল স্বীকার করেছেন। বোস জানান, তিনি দ্রুত কলকাতায় আমাদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করবেন।
অভিষেক বলেন, বিকেল তিনটে নাগাদ কল্যাণরা দার্জিলিং পৌঁছেছেন। রাজ্যপাল পৌঁছন সাড়ে পাঁচটায়। আমরা ভেবেছিলাম সারাদিন তিনি বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। পরে জানতে পারি, তাঁর একটাই কর্মসূচি ছিল আমাদের তিন প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করা। যদি তাই হয়, তাহলে কেন তিনি কলকাতায় এসে আমাদের বিকেল সাড়ে পাঁচটায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেননি।
এদিন সাক্ষাতের পর রাজভবন থেকে বেরিয়ে মহুয়ারা জানান, রাজ্যপাল খুব তাড়াতাড়ি কলকাতায় ফিরবেন। কেন্দ্রীয় আর্থিক বঞ্চনার কথা রাজ্যপাল মেনে নিয়েছেন বলে জানান তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
আরও পড়ুন: বিপর্যয়ে বাংলা কেন কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার, প্রশ্ন মমতার
শনিবার তৃণমূলের ধরনা তিনদিনে পড়ল। এদিনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছে, যত দিন না রাজ্যপাল কলকাতায় ফিরছেন এবং তাঁদের প্রতিনিধিদলের কথা বলছেন,তত দিন তিনি রাজভবনের সামনে থেকে ধরনা তুলবেন না। রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গ বন্যা খতিয়ে দেখার জন্য সেখানে রয়েছেন। রাজ্যপালই তাঁদের দার্জিলিং যেতে বলেন।
তৃণমূলের তিন প্রতিনিধির সঙ্গে প্রায় ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন রাজ্যপাল। বৈঠক শেষে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরা রাজ্যপালকে বলেছেন, মূল প্রতিনিধিদল রাজভবনের সামনে ধরনায় রয়েছে। রাজ্যপাল ডেকেছেন বলে, তাঁর পদকে সম্মান দিতেই দার্জিলিঙে সাক্ষাতে। তিনি কলকাতায় ফিরলে তৃণমূল ৫০ লক্ষ চিঠি তুলে দেবে তাঁর হাতে। এবং গোটা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তাঁকে বৈঠকে বসতে হবে। রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করে বেরনোর পরই অভিষেককে ফোন করে কথাবার্তার রিপোর্ট দিয়েছেন কল্যাণ। তিনি আরও বলেন, রাজ্যপাল তাঁদের জানিয়েছেন, ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই তাঁকে জানিয়েছিলেন। সেই মতো পঞ্চায়েতমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সব তথ্য তিনি নিয়েওছিলেন। পঞ্চায়েতমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যে তিনি সন্তুষ্টই হয়েছিলেন। ১০০ দিনের টাকা যাতে মার না যায় সে ব্যাপারে তাঁর যা করণীয়, তিনি তা করবেন।