পাটনা ও নয়াদিল্লি: দলিত ও পিছড়ে বর্গদের ‘হরিজন’ আখ্যা দিয়ে বুকে টেনে নিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী (Mahatma Gandhi)। সেই গান্ধীজয়ন্তীতে জাতিগত জনগণনা (Caste Survey) প্রকাশ করল বিহার (Bihar)। দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) ও প্রাক্তনী লালুপ্রসাদ যাদব (Lalu Prasad Yadav) বর্ণনা করেছেন। যদিও বিজেপি এটাকে মানুষের দৃষ্টি বিভ্রমকারী বলে মনে করে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, বিহারে ২৭ শতাংশ আর্থিকভাবে অনগ্রসর (OBC) এবং ৩৬ শতাংশ চরম অনগ্রসর (EBC) অর্থাৎ মোট ৬৩ শতাংশই পিছড়ে বর্গ বলে চিহ্নিত হওয়ার পরিসংখ্যান রাজ্য সরকারের মুখ উজ্জ্বল করবে না।
কী আছে জাতিগত জনগণনায়?
মোট জনসংখ্যা— ১৩.১ কোটি
অনগ্রসর শ্রেণি— ২৭.১২
চরম অনগ্রসর শ্রেণি— ৩৬.০১
অসংরক্ষিত— ১৫.৫২
ব্রাহ্মণ— ৩.৬৫
কুড়মি— ২.৮৭
ভূমিহার— ২.৮৬
রাজপুত— ৩.৪৫
যাদব— ১৪.২৬
আরও পড়ুন: ঠাকুমার অপারেশন ব্লু স্টারের স্বর্ণমন্দিরে নীল স্কার্ফ মাথায় রাহুল
দেশের মধ্যে বিহারই হল প্রথম রাজ্য যেখানে জাতিভিত্তিক জনগণনা হল। রাজনৈতিক দিক থেকে এই পরিসংখ্যানের তাৎপর্য, এরপর অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণের দাবি আরও তীব্র হবে বিহার থেকে। বর্তমানে যা ২৭ শতাংশ আছে। এছাড়াও বিহারি রাজনীতিতে ওবিসিরাই যে অন্যতম ভোটব্যাঙ্ক, তা লোকসভা নির্বাচনের আগে বৈজ্ঞানিক পরিসংখ্যানে প্রকাশ্যে এল।
রাজনৈতিক চাপানউতোর
রিপোর্ট প্রকাশ হতেই বিহারের শাসক জোট নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবং লালুপ্রসাদের আরজেডি তেড়েফুঁড়ে আসরে নেমে পড়েছে। অন্যদিকে, বিজেপির প্রবীণ নেতা তথা কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী গিরিরাজ সিং (Giriraj Singh) তার পালটা জবাবও দিয়েছেন। নীতীশ কুমার ইতিহাস গড়লেন বলে তাঁর দল বিবৃতি দিয়েছে। লালুপুত্র তথা রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেন, কয়েক দশকে সংগ্রামের ফল এই রিপোর্ট। এখন থেকে সরকারের নীতি এবং লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে এই পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে।
বিজেপির গিরিরাজ সিং বলেন, বিহারের মানুষের মধ্যে ‘ভ্রম’ সৃষ্টি করতেই এটা করা হয়েছে। এতে রাজ্যের একটি মানুষও উপকৃত হবেন না। সকলকে বোকা বানাতে চাইছে সরকার। নীতীশ কুমার এই রাজ্য ১৮ বছর ধরে শাসন করেছেন। লালুপ্রসাদ ক্ষমতায় ছিলেন ১৫ বছর। কিন্তু, তাঁরা যে উন্নয়ন কিছু করেননি এই রিপোর্ট তার প্রমাণ।