নয়াদিল্লি: উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে স্কুল শিক্ষিকার নির্দেশে এক মুসলিম ছাত্রের গালে অন্য সহপাঠীদের দিয়ে চড় মারানোর ঘটনায় রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যকে এই ঘটনার দায়িত্ব নিতে হবে বলেও মন্তব্য করে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং পঙ্কজ মিঠলের এজলাসে সোমবার এই বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি ছিল। সেখানে আদালতের মৌখিক পর্যবেক্ষণ হল, এই বিষয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ যেভাবে পদক্ষেপ করেছে তা খুবই আপত্তিকর।
প্রসঙ্গত, গত মাসে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর তোলপাড় পড়ে যায় দেশ জুড়ে। রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বাধীন যোগী আদিত্যনাথের সরকার ও পুলিশের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে। তারপর বেগতিক বুঝে পুলিশ ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এফআইআর করে। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল, শিক্ষিকার নির্দেশে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের পড়ুয়াকে সহপাঠীরা চড় মারছে। এবং সেই ছেলেটি কাঁদছে। শিশুমনে এভাবে সম্প্রদায়ভিত্তিক বিভাজন সৃষ্টি এবং শারীরিক নির্যাতনের প্রভাব ফেলার অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুন:কংগ্রেস ফিরলে দেশ আবার রুগণ হবে, ভোপালে মোদি
এদিন বেঞ্চ বলেছে, শিক্ষিকা একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে টার্গেট করেছিলেন। আমরা এর গভীরে যেতে চাই। শিক্ষকরা এই প্রক্রিয়ায় ছাত্রদের পড়ান, এটাই কি রাজ্যের শিক্ষার মান? রাজ্যকে এই ঘটনার দায় নিতে হবে। আদালতের আরও মন্তব্য, স্কুল কি পড়ুয়াদের জন্য শিশু মনস্তাত্ত্বিক নিয়োগ করেছে? যদি এই ঘটনা ঘটেই থাকে, তাহলে তা রাজ্যের বিবেকবুদ্ধিকে নাড়া দেওয়া উচিত, মন্তব্য সর্বোচ্চ আদালতের।
আদালতের আরও মন্তব্য, এটা দেখে প্রথমেই মনে হয়, ধর্ম ও জাতভিত্তিক বিভাজনের ব্যাপারে রাজ্য সরকার পক্ষপাতদুষ্ট। শিক্ষার অধিকার নিয়ে দায়বদ্ধতা পালনে রাজ্য ব্যর্থ। যার ফলে পড়ুয়ার উপর শারীরিক ও মানসিক হেনস্তা ঘটেছে। একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণে কোনও ছাত্রকে যদি শাস্তি পেতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে সেখানে শিক্ষার কোনও গুণ নেই। বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, হেনস্তার শিকার হওয়া ওই ছাত্রের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ শিশু মনস্তাত্ত্বিক নিয়োগ করে তার কাউন্সেলিং করাতে। যাতে তার ভিতর থেকে ভীতি কেটে যায়। এছাড়াও একজন আইপিএস অফিসার নিয়োগ করে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা। তিন সপ্তাহের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা করতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
দেখুন আরও খবর