বাসন্তী: চরম দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটিয়েও মাধ্যমিকে নজির বাসন্তীর সায়ন মণ্ডলের। বড় হয়ে চিকিৎসক হতে চায় সে। কিন্তু, বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র। কারও সাহায্য পেলে সেই দরিদ্রতাকে কাটিয়ে চিকিৎসক হবে সে। তাই সাহায্যের জন্য জনসাধারণের কাছে অনুরোধ রেখেছে সায়নের পরিবার।
বাসন্তী সেন্ট জেভিয়ার্স হাইস্কুল থেকে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সায়ন। স্কুলের মধ্যে রেকর্ড নম্বর পেয়ে পাশ করেছে সে। কিন্তু, আর্থিক দুরবস্থা এতটাই চরম যে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে কি না সেটাও বুঝে উঠতে পারছে না সে। বাবা অসুস্থ হয়ে দীর্ঘ দিন শয্যাশায়ী। অসুস্থতাজনিত কারণে মুখের ভাষা হারিয়ে গিয়েছে বাবা নিহার মণ্ডলের। মা রেখা মণ্ডল বাড়িতে সেলাইয়ের কাজ করেন। কোনও মতে সংসার চালান। ওই যৎসামান্য রজাগারেই ছেলের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন।
সায়ন জানিয়েছে, আর্থিক অবস্থার খারাপের জন্য সেই ভাবে কোনও গৃহশিক্ষক বা শিক্ষিকা রাখা সম্ভব হয়নি সায়নের। স্কুলের শিক্ষকরা যথেষ্ট পরিমাণে পড়াশোনার ব্যাপারে সাহায্য করেছে। স্কুলের শিক্ষক ও কয়েক জন ও কিছু মানুষের সহযোগিতার জন্যই আজ এই সাফল্য এসেছে বলে জানায় সায়ন।

আরও পড়ুন Jalpaiguri: হাসপাতালের খাবারে কেঁচো! জলপাইগুড়িতে বিক্ষোভ রোগীর পরিবারের
বাসন্তীর হোগল নদীর পাড়ে একটি প্লাস্টিকের ঘরের মধ্যে থেকেই তাঁদের ছেলে পড়াশোনা করেছে। মাথার উপরের যে টিনের চাল তাও ফাটা। ঘরে লাগানো দরমার বেড়াও ভেঙে চৌচির। দরিদ্রতাকে সঙ্গী করেও মাধ্যমিকে সায়নের প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৮। বাংলা, ইংরেজি, অংক, ইতিহাস, ভূগোল, ভৌতবিজ্ঞান, জীবনবিজ্ঞান সবকটিতেই লেটার মার্কস। সে চায় বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে।
সায়ন আরও জানিয়েছে, ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে সমাজের মান উন্নয়ন করাই তাঁর আসল উদ্দেশ্য। আর তাই সে যতই অভাব-অনটন আসুক পড়াটা চালিয়ে যেতে চায়। কারণ সে প্রতিটা মুহূর্ত উপলব্ধি করে বাড়িতে তাঁর বাবা অর্থের অভাবে মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ছে প্রতিদিন একটু একটু করে। সমাজের অসহায় মানুষদের এই অবস্থায় তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে পড়াশোনা করার।
আরও পড়ুন Rain Update: বর্ষার প্রভাবে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরের জেলাগুলিতে