হুগলি: ত্রিকোণ প্রেমের জের। বিবাহিত প্রেমিকার স্বামীকে মেরে বস্তাবন্দি করে কুয়োয় ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রেমিকের বিরুদ্ধে। যদিও প্রেমিকের দাবি পরকিয়া নয়, টাকা-পয়সা নিয়ে বিবাদের জেরেই এই খুন। ঘটনাটি ধনেখালির ভাণ্ডারহাটি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউলপাড়া এলাকার।
পুলিস সূত্রের খবর, হরিপালের এক তরুণীর সঙ্গে সতেরো বছর আগে বিয়ে হয় জাঙ্গীপাড়া মহেশপুরের সনাতন মালের। তাঁদের একটি বছর পনেরোর ছেলেও রয়েছে। অন্যদিকে তরুণীর দিদি ভান্ডারহাটি দেউলপাড়ার বাসিন্দা। সেখানে যাতায়াতের সুবাদে তরুণীর পরিচয় হয় বছর সাঁইত্রিশের বেচারাম মালিকের সঙ্গে। প্রায় সাত বছর ধরে ওই যুবকের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।
২৮ এপ্রিল ওই বধূ ধনেখালিতে ডাক্তার দেখাতে আসেন। তাঁকে নিতে আসেন সনাতন। সেখানেই সনাতনের সঙ্গে দেখা হয় বেচারামের। পূর্বপরিচিত হওয়ায় বেচারাম তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যায়। দু’জনে মদ্যপান করে। অভিযোগ, এরপর হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে গলায় তার পেঁচিয়ে সনাতনকে খুন করে বেচারাম। বাড়িতেই মৃতদেহ বস্তাবন্দি করে ফেলে রাখে। রাতে বাড়ি থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরে একটা কুয়োতে নিয়ে গিয়ে দেহ ফেলে দেয়।
এরপর ওই কুয়ো থেকে জল তুলতে যান দামু লোহার নামে এক ব্যক্তি। দেখেন জলের রঙ লাল এবং দূর্গন্ধ যুক্ত। ইঁদুর বা অন্য কিছু মরেছে ভেবে কুয়োর ঢাকনা সরিয়ে দেখেন বস্তা পড়ে রয়েছে। এরপর পুলিসকে খবর দেওয়া হয়। পুলিস গিয়ে বস্তা তুলে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন- Raimatang: টাকা কালেকশনে গিয়ে ব্যবসায়ীর রহস্য মৃত্যু, দেহ উদ্ধার রায়মাটাং চা বাগানে
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, মৃতের মাথায় আঘাত, গলায় দাগ রয়েছে। পুলিসের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করার পর মৃতদেহ কুয়োয় ফেলা হয়েছে। মৃতদেহ তখনও অজ্ঞাত পরিচয় থাকায় খোঁজা শুরু করে পুলিস। সেই সূত্র ধরে জাঙ্গীপাড়ার মহেশপুরে সনাতনের ঠিকানা পেয়ে যায়। সনাতনের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস। সেখান থেকে তাঁর প্রেমিক বেচারামের কথা জানতে পারে। শনিবার রাতেই বেচারামকে গ্রেফতার করে পুলিস।
পুলিসি জেরায় খুনের কথা কবুল করেছে অভিযুক্ত। স্বামী খুনে স্ত্রীর যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ পুলিসের। তাই বেচারাম ও ওই মহিলাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করছে পুলিস। দুজনের ফোন কল খতিয়ে দেখা হচ্ছে।