হাওড়া: ছোট্ট মেয়েটির হাত ধরে স্কুলে ভর্তি করতে যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনায়(Howrah road accident) প্রাণ হারালেন মা| যে হাত ধরে ছোট্ট থেকে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল মেয়েটি, সেই অবুঝ চোখের সামনেই মায়ের মর্মান্তিক পরিণতি দেখল সে| ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার পাঁচলার জুজারসাহা-উত্তরপাড়ায় ধূলাগড়-ফটিকগাছি রাজ্য সড়কে|
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ ছোট্ট মেয়ের হাত ধরে যাচ্ছিলেন বছর ৩৫-এর শম্পা মান্না| পিছন থেকে দ্রুতগতিতে আসা লরির চাকায় মহিলার গায়ের চাদর আটকে যায়। লরিটি তাঁকে টানতে টানতে রাস্তার উপর দিয়ে বেশ কিছুটা নিয়ে যায়। চাদর পুরোটা গুটিয়ে যেতেই রাস্তার উপরে পড়ে যাওয়া মহিলার মাথার উপর দিয়ে চাকা চলে যায়| ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মহিলার|
দুর্ঘটনার সময় বিপদ বুঝতে পেরে মেয়ের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে মায়ের শেষ কর্তব্য পালন করেন শম্পাদেবী| শুধু হাত ছাড়িয়েই না, ধাক্কা দিয়ে মেয়েকে রাস্তার ধারে সরিয়ে দেন| মা নিজে মারা গেলেও মেয়েকে বাঁচিয়ে গেলেন।
পাঁচলা থানার পুলিসের তরফে জানানো হয়েছে, জুজারশাহের বাসিন্দা শম্পা মান্না তাঁর মেয়ে পূর্বাশাকে নিয়ে কুলডাঙা বিবেকানন্দ বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে যাচ্ছিলেন| সেই সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে| লরিটিকে আটক করা হয়েছে| চালক পলাতক| ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে যাওয়া পূর্বাশাও কিছুটা আহত হয়েছে। তবে তার থেকে বেশি মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়ে শিশুটি| চোখের সামনে মায়ের মৃত্যু দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে সে|
আরও পড়ুন: West Medinipur: হাসপাতালে মৃত শিশুকে ওঝার কাছে নিতে জোরাজুরি, ধুন্ধুমার
শম্পা দেবীর স্বামীর দাবি, মেয়েকে অনেক বড় করে তোলার স্বপ্ন ছিল শম্পাদেবীর| মায়ের মৃত্যুর পর কীভাবে মা-হারা সন্তানকে বড় করে তুলবেন তা বুঝতে পারছেন না তিনি| মেয়ের পড়াশোনা কী করে হবে! তার থেকেও এই দুর্ঘটনার দৃশ্য মেয়ের মন থেকে কী করে বের করতে পারবেন, সেই চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা পরিবারের মাথায়| পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে|