জলপাইগুড়ি: অতিমারির আবহে জলপাইগুড়ির যৌনপল্লি প্রশাসনের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ, যৌনপল্লিতে মানা হচ্ছে না বিধিনিষেধ। বিধিনিষেধ যে মানা হচ্ছে না, তা যৌনকর্মীরাও জানেন। এ-ও জানেন, সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু, তার পরেও শুধুমাত্র দু’বেলা দু’মুঠো সন্তানদের মুখে ভাত তুলে দিতে, সবকিছুই মেনে নিতে হচ্ছে। বলা ভাল, মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। যে কারণে যৌনপল্লিতে আসা লোকজন কোভিড বিধি অগ্রাহ্য করলেও কিছু বলে উঠতে পারছেন না। জলপাইগুড়ি শহরের দিনবাজার এলাকার যৌনপল্লি নিয়ে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই পুর কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। স্বভাবতই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আদিম এই পেশার সঙ্গে জড়িত মহিলারা।
গোটা রাজ্যের সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলাতেও সংক্রমণ মাথাচাড়া দিয়েছে। বিগত কয়েক দিনে সংক্রমণের রেখাচিত্র জেলায় যে ভাবে বাড়ছে, তাতে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে নতুন করে আক্রান্ত ১১২ জন। এই অবস্থায় জলপাইগুড়ির দিনবাজার যৌনপল্লি জেলা প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ, রেডলাইট এরিয়ায় আসা লোকজনের মুখে মাস্ক সে ভাবে নজরে পড়ছে না।
আরও পড়ুন : Bengal Covid : কোভিডের বাড়বাড়ন্তে দক্ষিণ শহরতলিতে তিন দিন করে বাজার বন্ধ
অসহায়তা প্রকাশ করে যৌনকর্মীরা জানান, আতঙ্কের মাঝেই তাঁদের কাজ করে যেতে হচ্ছে। না হলে পেট চলবে না। শুধু নিজের না, ঘরে থাকা সন্তানের কথাও তাঁদের ভাবতে হয়। তাই মহামারীতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই তাঁদের এই কাজ করতে হচ্ছে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘করোনাবিধি সকলকেই মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। দূরত্ব বিধিও বজায় রাখতে হবে’। দিনবাজার যৌনকর্মীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন। তবে, যৌনপল্লি বন্ধ করে দেওয়া হবে, এমন কোনও ইঙ্গিত তিনি দেননি। অনেক দুশ্চিন্তার মধ্যেও যৌনকর্মীদের জন্য আপাতত এটাই স্বস্তির খবর। পুর কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয়, দু’দিনের মধ্যেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।