জামালপুর: সাপ সহ খিচুড়ি রান্না হল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। তা খেয়ে ফেলায় শিশুদের নিয়ে হাসপাতাল ছুটলেন মায়েরা। শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টির জন্য অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র থেকে দেওয়া হয় রান্না করা খাবার। সেই খাবারের মধ্যে যে সাপ থাকবে। এমনটা ভাবা বোধহয় সকলের কল্পনারও অতীত। কিন্তু বাস্তবেই বুধবার সাপ সহ খিচুড়ি রান্না হয় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের বাগকালাপাহাড় গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। আর ওই খিচুড়ি খেয়েই ভয়ে আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুরা।
ঘটনার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে ছ’শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয় জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়েই ব্লকের বিডিও এবং সিডিপিও জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে শিশুদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। এমন ঘটনা কিভাবে ঘটল তার তদন্ত শুরু করেছে ব্লক প্রশাসন।
জামালপুর ব্লকের পাড়াতল ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত এক গ্রাম বাগকালাপাহাড়। ওই গ্রামের ১৩৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে পুষ্টিদায়ক খাবারের জন্য শিশু ও গর্ভবতী মিলিয়ে ৫৪ জনের নাম নথিভুক্ত রয়েছে । তাঁরা মূলত খোরদোপলাশি ,কাঠালডাঙা ও বাগকালাপাহাড় গ্রামের বাসিন্দা।
অন্যান্য দিনের মতো বুধবারও ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খিচুড়ি রান্না হয়। বেলা ১০টার মধ্যে রান্না শেষ হলে শিশু ও গর্ভবতীরা সেই খিচুড়ি নিয়ে বাড়িতে চলে যান। বাড়িতে গিয়ে খিচুড়ি খেতে গিয়ে এক শিশুর অভিভাবকদের চোখ কপালে ওঠে। তাঁরা দেখেন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে দেওয়া গরম খিচুড়ির মধ্যে একটি মরা সাপের বাচ্চা রয়েছে।
যা দেখেই ওই শিশু ও তাঁর পরিবারের লোকজন আঁতকে ওঠেন। তাঁরাই ছুটে গিয়ে গ্রামের অন্য শিশুর পরিবার ও গর্ভবতীদের বিষয়টি জানান। খিচুড়ি না খাওয়ার জন্যেও বলেন। ততক্ষণে যে শিশুরা খুচুড়ি খেয়ে ফেলেছিল তাঁদের অভিভাবকরা ঘটনার কথা জেনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। ভয়ে আতঙ্কে শিশুরা শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করা শুরু করলে দুপুরে তাদের জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় । চিকিৎসকরা শিশুদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে বেশ কিছু সময় তাদের অবজারভেশনে রাখেন। বেশ কিছুক্ষণ অবজারভেশনে রেখে তাদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- Coochbehar: কোচবিহারে ধসে পড়ল নির্মীয়মাণ স্কুলের ছাদ, আটকে কয়েকজন
ঘটনায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমণি জ্যোৎস্না ঘোষ বলেন, খিচুড়ি রান্না করার সময়ে তাতে আস্ত একটা সাপের বাচ্চা কখন পড়ে যায় তা কারও নজরে আসেনি। বিষয়টি জানাজানি হতেই তিনিও দেখেন খিচুড়িতে একটা মরা সাপ রয়ে আছে । আট জন শিশু ওই খিচুড়ি খেয়ে ফেলে ছিল । তাঁদের হাসপাতালে পাঠিয়ে বাকিদের খিচুড়ি না খাওয়ার কথা বলা হয়। জামালপুরের বিএমওএইচ ঋত্বিক ঘোষ বলেন, শিশুদের তেমন কোনও অসুস্থতা দেখা যায়নি। তবুও ছ’শিশুকে বেশ কিছুটি সময় অবজারভেশনে রেখে পর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় জামালপুর ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, শিশুদের বড় কোনও বিপদ হয়নি এটাই রক্ষে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সবাইকে ইতিমধ্যেই শো-কজ নোটিশ ধরানো হয়েছে। শো-কজের উত্তর সন্তোষজন না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।