দার্জিলিং: সুদর্শন, অভিজাত, ধনী, উচ্চশিক্ষিত, চলনেবলনে সপ্রতিভ। দার্জিলিং(Darjeeling) যাঁরা গিয়েছেন তাঁদের সকলেই দেখেছেন ম্যালের বুকের উপর বসে রয়েছে সুপ্রসিদ্ধ এক অভিজাত রেস্তরাঁ গ্লেনারি’জ (Glenary’s)। সিগনেচার কেক-প্যাস্ট্রির দুনিয়ায় এই দোকানের নাম শ্বেতাঙ্গ মহলেও খ্যাত। সেই দোকানের মালিক অজয় এডওয়ার্ড(Ajay Edward)।
শুধু বিশাল ধনাঢ্য ব্যক্তি বলেই নয়, বিজেপির সাংসদ রাজু বিস্তার দার্জিলিংয়ে পদ্ম-বিরোধিতার অটুট পাহাড় গড়ে তুলে জয় ছিনিয়ে আনলেন অজয় এডওয়ার্ড। রাজ্যজুড়ে পুরভোটের সবুজঝড়েও সদ্য গজিয়ে ওঠা এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি ( Hamro Party) কাঞ্চনজঙ্ঘার মতোই মাথা তুলে দাঁড়াল। রাতারাতি ভোট সমীকরণ বদলে গেল পাহাড়ের।
এই তো সেদিন! ২৫ নভেম্বর। মিরিকে বসে নতুন দল গঠন। নাম হল হামরো পার্টি বা আমাদের দল। পাহাড়বাসীকে দায়িত্ব দিলেন দলের পতাকা ও প্রতীক তৈরি করার। সেইমতো সকলের মতামত নিয়ে গণভোটে তৈরি হল দলীয় পতাকা। সাদা পতাকার মধ্যে কাঞ্চনজঙ্ঘার শ্রেণি। আকাশে উড়ে চলেছে মুক্ত বিহঙ্গ। সেই প্রতীকেই পাহাড় জয় করলেন অজয় এডওয়ার্ড।
আরও পড়ুন- Hamro Party Darjeeling: ঘাসফুল নয়, পদ্মর নয়, দার্জিলিং ‘হামরো পার্টি’র
পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে আগুন জ্বালিয়ে তোলা সুবাস ঘিসিংয়ের ছেলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এডওয়ার্ড। সেই সূত্রেই জিএনএলএফে যোগদান। তারপর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে গোর্খাদের দাবিতেই অনড় ছিলেন তিনি। বিমল গুরুংয়ের আমলে একসময় বিজেপির কাছাকাছি এলেও অচিরেই সেই মোহভঙ্গ হয়। জিএনএলএফের দার্জিলিং টাউন সভাপতি থেকে পদত্যাগ করে নিজের দল গঠন করেন।
এদিন সকলকে একেবারে চমকে দিয়ে পুরসভা দখল করলেও নিজে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে হেরে গিয়েছেন। তা হলেও তিনিই এখন দলের প্রধান মুখ। এই ভোটে তাঁর পরিবারের কাউকেও প্রার্থী করেননি এডওয়ার্ড। এখন বাকি রয়েছে কালিম্পং, কার্শিয়াং ও মিরিক পুরসভার ভোট এবং জিটিএ নির্বাচন। সেগুলিতেও হামরো পার্টি কী ফল করে, সেটাই এখন দেখার। তবে অজয় এডওয়ার্ড একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, পাহাড়ের মাটিতে বিজেপি এককথায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।