বসিরহাট: পরীক্ষা (Exam) শুরুর আগেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। মঙ্গলবার থেকে শুরু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (Higher Secondary Exam)। তার আগের দিনই আত্মঘাতী হল এক উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া। বসিরহাটের (Basirhat) বাঁকড়া গ্রামের ঘটনা। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ (Police)।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ছাত্রের (Student) নাম হিরণ্ময় বিশ্বাস (১৮)। লক্ষণ বিশ্বাস এবং অনিমা বিশ্বাসের একমাত্র সন্তান হিরণ্ময়। সে হিঙ্গলগঞ্জের কনকনগর এস ডি ইনস্টিটিউশনের ছাত্র ছিল। তার সেন্টার পড়েছে হিঙ্গলগঞ্জ হাই স্কুলে। সোমবার সকালে বাড়িতেই ঝুলন্ত অবস্থায় হিরন্ময়কে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রতিবেশীরা জানান, বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। হিরন্ময় একাই বাড়িতে ছিল।
আরও পড়ুন:HS Exam 2023 | ছেলের সঙ্গেই উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছেন মা, গৃহবধূর ইচ্ছাশক্তির জয়
ওই পড়ুয়ার মৃত্যু নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। পড়াশোনার মানসিক চাপ, বাবা-মায়ের বকুনি নাকি প্রেমে প্রত্যাখ্যানের কারণে এই আত্মহত্যা, পুলিশ সব দিক খোলা রেখেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃতের মা অনিমার অভিযোগ, ছেলের মৃত্যুর পিছনে গ্রামেরই একটি মেয়ের হাত রয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশ তদন্ত করে দেখুক, ওই মেয়েটির কোনও প্ররোচনা ছিল কি না।
স্কুলের শিক্ষকরা জানান, অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল হিরন্ময়। কেন ও পরীক্ষার আগের দিনই এই পথ বেছে নিল, বোঝা যাচ্ছে না। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ঠিক আগের দিনই এই ঘটনা ঘটায় হিরন্ময়ের সহপাঠীরা মুষড়ে পড়েছে। ওর একাধিক বন্ধু এদিন বলে, হিরন্ময় এভাবে নিজেকে শেষ করে দেবে, ভাবতেই পারছি না। রবিবারও ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু কোনও অস্বাভাবিকতা টের পাওয়া যায়নি ওর মধ্যে।
গত রবিবারই দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার মহেশতলায় সৌভিক অধিকারী নামে এক উচ্চ পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে। ঘটনার আগের দিনও অনেক রাত অবধি সে পড়াশোনা করছিল বলে দাবি পরিবারের। ভোর বেলা দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় বাড়ির লোকজনের। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁরা দেখেন, গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে ঝুলছে সৌভিক। বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানানো হয়, আগেই মৃত্যু হয়েছে তার।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই দুই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। মনোবিদদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, সন্তানদের উপর অভিভাবকদের একাংশ মাত্রাতিরিক্ত চাপ দেয়। অনেক সময় সেই চাপ নিতে না পারায় ছেলেমেয়েরা মানসিক অবসাদে ভোগে। কোনও কোনও পড়ুয়া আত্মহত্যার মতো চরম পথও বেছে নেয় এই অবসাদ থেকে। এর জন্য অনেক মনোবিদই স্কুল স্তরে পড়ুয়াদের নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের উপর বিশেষ জোর দেন। পাশাপাশি অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের চাপ না দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন মনোবিদরা।