বসিরহাট: শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election)। তার আগেই সিপিএম-তৃণমূল-বিজেপি (CPIM-TMC-BJP) ছেড়ে কংগ্রেসে (Congress) যোগদান করলেন বহু মানুষ। ইতিমধ্যেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম (CPIM) ও কংগ্রেসের (Congress) একটি জোটের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। এর মধ্যেই একপ্রকার উল্টো ছবি দেখা গেল সীমান্তের গ্রামে। বসিরহাটের (Basirhat) স্বরূপনগর ব্লকের চারঘাট গ্রামে সিপিএম-তৃণমূল-বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করেন বহু মানুষ। প্রায় দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী সমর্থক এদিন কংগ্রেসে যোগদান করেন। তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন কংগ্রেসের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা গ্রামীণের সভাপতি অমিত মজুমদার ও বসিরহাট টাউন কংগ্রেস সভাপতি হিরন্ময় দাস সহ একাধিক কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সমস্ত রাজনৈতিক দল নিজেদের সংগঠনকে মজবুত করতে মরিয়া। ইতিমধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। রাজ্যের শাসক-বিরোধী প্রতিটি দলই ইতিমধ্যে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে দিয়েছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে একদিকে যেমন শাসক দল বিরোধীদের তুলোধনা করছে। অন্যদিকে বিরোধীরাও শাসক দলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। বিগত দিনগুলিতেও দেখা গিয়েছিল একাধিক নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেস জোট সঙ্গী ছিলেন। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিপিএম থেকে কংগ্রেসে এই যোগদান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গত বিধানসভা তথা পুরভোটে রাজ্যের শাসক দল যেভাবে জয়লাভ করেছে, তারপরেও পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগেই তৃণমূল থেকে কংগ্রেসের যোগ দেওয়াও এক অভিনব ঘটনা। পাশাপাশি কেন্দ্রে যখন বিজেপি ও কংগ্রেসের দ্বৈরথ চলছে সেখানেই আবার শাসকদল বিজেপি থেকে কংগ্রেসের যোগদান সম্পূর্ণটাই যেন স্বরূপনগরবাসীর কাছে পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজনীতির এক নতুন সমীকরণ।
আরও পড়ুন:Kurmi Agitation | ভোগান্তির পঞ্চম দিনে পুরুলিয়ায় আন্দোলন প্রত্যাহার কুরমি সমাজের
দলত্যাগী সিপিএম নেতা তন্ময় বসাক ও সুব্রত বিশ্বাসরা বলেন, “দলের মধ্যে একাধিক দুর্নীতি ও কোন্দলের জেরে আমরা সিপিএমে আর থাকতে পারছিলাম না। পাশাপাশি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল যেভাবে একাধিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে সেই জন্য আমরা বিকল্প দল হিসাবে কংগ্রেসকে বেছে নিলাম।” অন্যদিকে দলত্যাগী তথা চারঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কর্মী সামাদ মণ্ডল বলেন, “দলে নবীন-প্রবীণদের মধ্যে এক বচসার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের তৃণমূল নেতারা পুরনো নেতা কর্মীদের সম্মান দিচ্ছে না, স্বেচ্ছাচারিতা করে যাচ্ছে। যার জন্যই আজ আমরা কংগ্রেসে যোগদান করলাম।”
দল ছেড়ে আসা বিজেপি নেতা অনাথ মণ্ডল জানান, “জাতীয় স্তরে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। একাধিক দৈনন্দীন সামগ্রী থেকে শুরু করে পেট্রোল-ডিজেল, কেরোসিন ও গ্যাসের দাম যেভাবে দিনে দিনে বাড়িয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। সেই জন্য আজ কংগ্রেসে যোগদান করতে বাধ্য হলাম।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গ্রামীণ অমিত মজুমদার বলেন, “এই যোগদানের ফলে স্বরূপনগর ব্লকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে আমাদের সংগঠন মজবুত হল। পাশাপাশি দলের কাজে অনেক বেড়ে গেল।”
যদিও বিরোধীদের এই দাবিকে নস্যাৎ করে তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্বরূপনগর পঞ্চায়েত সমিতির বনভূমি কর্মাধ্যক্ষ রমেন সর্দার বলেন, “ওই দলত্যাগীর কোনও জনভিত্তি নেই। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি বিগত ভোট গুলিতেও সে দলের কাছে সক্রিয় ভূমিকায় অংশগ্রহণ করেনি। এর জেরে দলে খুব বেশি হবে না।”