পুরুলিয়া : ফের আন্দোলনের পথে আদিবাসী কুড়মি সমাজ (Adibasi Kurmi Samaj) । কুড়মি আন্দোলন নিয়ে তৃণমূল (TMC) নেতা অজিত মাইতির (Ajit Maiti) বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসছেন জঙ্গলমহলের কুড়মি (Kurmi) সম্প্রদায়ের মানুষজন। জেলায় জেলায় চলছে আন্দোলন বিক্ষোভ। সোমবার পুরুলিয়ার সিন্দরি মোড়ে জমায়েত করে পথ আবরোধ করে অজিত মাইতি ও রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর (Srikanta Mahato) কুশ পুত্তলিকা দাহ করে বিক্ষোভ দেখায় কুড়মি সমাজের মানুষজন । অজিত মাইতি এবং শ্রীকান্ত মাহাতো ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন কুড়মি নেতারা।
এছাড়াও আগামীকাল রাজ্যের চার জেলায় লাগাতার রাস্তা অবরোধ ও কুশ পুত্তলিকা দাহ করার হুঁশিয়ারি দিলেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাতো । সোমবার পুরুলিয়া শহরে আদিবাসী কুড়মি সমাজের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা ঘোষণা করলেন তিনি। একইসঙ্গে বললেন, নির্বাচনে কুড়মি সমাজের দেওয়ালে দেওয়ালে সমস্ত রাজনৈতিক প্রচার নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পাশাপাশি রাজনৈতিক মিটিং, মিছিলেও অংশ গ্রহণ করবে না আদিবাসী কুড়মি সমাজের মানুষজন । তবে মানুষের অসুবিধার সৃষ্টি করে আন্দোলন করা উচিত নয় । তাদের আলোচনায় বসা উচিত বলে জানালেন তৃনমূল মুখপাত্র শান্তিরাম মাহাতো ।এদিকে কুড়মি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করা নিয়ে আরো জল্পনা বাড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলে। তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি শনিবারের করা মন্তব্যের পর রবিবার নতুন করে অজিত মাইতি বলেন, দেওয়াল লিখতে দেব না বললে আমরাও চুড়ি পরে বসে নেই। দেওয়াল আমরা লিখবই। অন্যদিকে শ্রীকান্ত মাহাতোর উপস্থিতিতেই অজিত মাইতির মন্তব্যের নিন্দা করে দুজনের নামে ধিক্কার পোস্টার কুড়মি সংগঠনের।
শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর শহরে একটি সাধারণ সভাতে কুড়মি সম্প্রদায়ের আন্দোলন প্রসঙ্গে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। তিনি বলেছিলেন, কিছু কুড়মি নেতা স্বঘোষিত খালিস্তানি নেতার মতো কুড়মিদের ভুল বোঝাচ্ছেন। আমরা ওদের এই আন্দোলনের সর্বাত্মক বিরোধিতা করবো।তৃণমূলের এই বিধায়ক তথা দুই সাংগঠনিক জেলার কো অর্ডিনেটর অজিত মাইতির এই মন্তব্যতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় জঙ্গলমহলের কুড়মি সম্প্রদায়ের মধ্যে। প্রতিবাদ শুরু করেন। পরিস্থিতি বেগতিক মনে হওয়াতে রবিবার রাতে সাংবাদিক সম্মেলন করে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন- কুড়মি সম্প্রদায়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী অনেক কিছুই করেছেন। তাদের আঘাত করার মত কোনও ইচ্ছাই শাসকদলের নেই। অজিত মাইতি যে মন্তব্য করেছেন তা তার ব্যক্তিগত। দল এটাকে সমর্থন করে না। এই বিষয়ে দল তার পাশেও নেই।
বারবার এই ধরনের মন্তব্য নিয়ে সোমবার সকাল থেকেই শালবনিতে জঙ্গল মহলের কুড়মি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। শালবনের কর্মী নেতা সুমন মাহাতো বলেন, অজিত মাইতি যে মন্তব্য করেছেন তা ধিক্কার যোগ্য। তার পাশেই সভাতে বসে ছিলেন আমাদের কুড়মি সম্প্রদায়ের নেতা শ্রীকান্ত মাহাতো নিজেও। তিনি চুপ ছিলেন। দুজনের নামেই আমরা ধিক্কার পোস্টার লাগাচ্ছি শালবনির জঙ্গলমহল জুড়ে। দু’জনকেই ক্ষমা চাইতে হবে না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।শালবনির হাই স্কুল চত্বরেও শালবনীর বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর বাড়ির আশেপাশে দেখা গেল বিভিন্ন দেওয়ালে জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি সহ এলাকার বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর নামে পোস্টার পড়েছে।