একটা সময় ছিল যখন বাংলা ছবির দর্শক হলমুখী হতেন না। বিনোদন মানেই তাঁরা বুঝতেই হিন্দি ছবি। সেই সময় বাংলা ছবিকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন যারা, তাদের প্রথম জনের নাম যদি হয় প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়, তবে দ্বিতীয় জন অবশ্যই ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আজ ৫১-এ পা দিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
শহর থেকে মফস্বলঃ থেকে গ্রাম-গঞ্জ প্রসেনজিত- ঋতুপর্ণার জুটিতে মুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শক। হলে ভিড়ে করে শুধু একবার বলো, তুমি এলে তাই, শ্বশুর বাড়ি জিন্দাবাদ, মনের মানুষের মতো ছবি দেখতে ভিড় করত আম-আদমী। বাংলা বাণিজ্যিক ছবির একসময়ের অন্যতম ভরসা ছিলেন ঋতুপর্ণা। সেই সময়ে প্রসেনজিত- ঋতুর ছবি মানেই সুপারডুপার হিট।
আস্তে আস্তে ভিন্ন ধারার ছবিতেও নিজের পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছেন ঋতু। ঋতুপর্ণ ঘোষের দহন-এ রমিতার চরিত্রে অভিনয় করে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। কাজ করেছেন ঋতুপর্ণের উতসব-এ। আদ্যপান্ত কর্মাশিয়াল ছবিতে কাজ করতে করতেই ঋতুর দহন-এ কাজ করেছিলেন ঋতুপর্ণা। সেই শুরু তারপর ধীরে ধীরে নায়িকা ঋতু থেকে চরিত্রাভিনেত্রী ঋতুপর্ণায় উত্তরণের সাক্ষী আলো, চাঁদের বাড়ি, চতুরঙ্গ, মুক্তধারা, চারুলতা ২০১১-র মতো ছবি। নিজের চিরাচরিত স্টাইল, ফ্যাশনেই বরাবর বাজিমাত করে এসেছেন ঋতু। তিনিই যে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম বাঘিনী তা বুঝিয়েছেন বারেবারে। হালফিলের প্রাক্তন-এ ফের একবার তিনি বুঝিয়েছেন প্রসেনজিতের সঙ্গে তাঁর জুটিতে আজও ইমোশনাল হয় সিনেপ্রেমী বাঙালিরা।
বাংলার পাশাপাশি বলিউড এমনি দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতেও জ্বলওয়া দেখিয়েছেন টলিপাড়ার ঘরের মেয়ে। ম্যায়, মেরি পত্মী অওর উও, মিত্তল ভার্সেস মিত্তল, বাম বাম বোলে-র মতো বলিউডি ছবিতে ঋতুতে মুগ্ধ হয়েছে আসমুদ্রহিমাচল। অভিনয়ের পাশাপাশি নাচ এমনকি সামাজিক দায়িত্বপালন সবেতেই আজও সমান উদ্যোমী ঋতু। ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য পরিচালকরা তো বটেই, নবাগত পরিচালকরাও ঋতুপর্ণার স্বজন। নবাগতদের ছবিতে কাজ করতেও পিছপা হন না তিনি, আসলে সব সময় কেরিয়ারের ভাবনা নয়, বরং ইমোশনেই চলেন টলিপাড়ার এই সুন্দরী।
টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের লেট- লতিফগিরির না না গল্প চাউর আছে। তেমনই চাউর আছে প্রসেনজিতের সঙ্গে তাঁর প্রেম- প্রেমভাঙা- অভিমানের গল্প। কান পাতলেই শোনা যায় প্রতিবারই ভোটের মরসুমে নাকি প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর আমন্ত্রণ পান ঋতু- এসব জল্পনায় অবশ্য কানই দেন না টলিসুন্দরী। নিজের ইমোশন, ইন্ডাস্ট্রিতে কনট্রিবিউশন নিয়েই মত্ত থাকেন সুন্দরী। এটুকুই তাঁর বেঁচে থাকার সুখ।