বিগত কয়েক বছরে করোনার তাণ্ডবে আমরা অনেক গুণীজনকে হারিয়েছি। ২০২০-২১ এর পর ২০২২ সালেও অনেককেই আমাদের চোখের জলে চির বিদায় জানাতে হয়েছে।
শাঁওলি মিত্র: মঞ্চ ও চলচ্চিত্রের স্বনামধন্য অভিনেত্রী শাঁওলি মিত্র চির বিদায় নিয়েছেন এ বছরের ১২ জানুয়ারি। ৭৪ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ভারতীয় নাট্য জগতের কিংবদন্তি শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের একমাত্র কন্যা ছিলেন শাঁওলি। জীবনের প্রথম দিকে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরে নিজস্ব নাট্যদল ‘পঞ্চম বৈদিক’ তৈরি করেছিলেন তিনি।
বিরজু মহারাজ: প্রখ্যাত কত্থক নৃত্যশিল্পী ১৬ই জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
নারায়ন দেবনাথ: এ বছরের ১৮ই জানুয়ারি ৯৭ বছর বয়সে বাংলা কমিক্স জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র নারায়ণ দেবনাথের মৃত্যু হয়। বাঁটুল দি গ্রেট, হাঁদা ভোঁদা, নন্টে ফন্টে ইত্যাদি জনপ্রিয় চরিত্রগুলির স্রষ্টা ছিলেন নারায়ণবাবু। তিনি রাষ্ট্রপতি পুরস্কার সহ বিভিন্ন সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন।
ওয়াসিম কাপুর: প্রখ্যাত এই চিত্রশিল্পী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় তাঁর বাসভবনে ২৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
লতা মঙ্গেশকর: ২৭ দিনের লড়াই শেষ করে করোনার কাছে পরাজয় স্বীকার করেন এই উপমহাদেশের সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। ৯২ বছর বয়সে ভারতরত্ন লতা মঙ্গেশকর আমাদের ছেড়ে চলে যান না ফেরার দেশে। তাঁর মৃত্যু হয়েছিল ৬ ফেব্রুয়ারি। করোনার পাশাপাশি নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে এই মহান সংগীতশিল্পীর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও বয়স জনিত নানান সমস্যার কারণে চিকিৎসকরা তাঁকে আর বাঁচাতে পারেননি।
বাপ্পি লাহিড়: চলতি বছরের ১৫ই ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ের হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন জনপ্রিয় এই বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। গত বছরের শেষের দিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও পরবর্তীকালে তাঁকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়: ‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয় চলতি বছরের ১৫ই ফেব্রুয়ারি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। ১৯৪৮ সালে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের পাশাপাশি চলচ্চিত্র জগতেও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া অসংখ্য গান জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছিল। বাংলা চলচ্চিত্র ছাড়াও ১৭ টি হিন্দি ছবিতে তিনি প্লেব্যাক করেছিলেন। পাশাপাশি আধুনিক গানের নিজস্ব অ্যালবাম ছিল।
অভিষেক চট্টোপাধ্যায়: মাত্র ৫৭ বছর বয়সে টলিউডের এই অভিনেতা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২৪ মার্চ চির বিদায় নেন।
পার্থ ঘোষ: স্বনামধন্য বাঙালি এই বাচিক শিল্পীর পার্থক্য জনিত রোগে মৃত্যু হয়েছিল ৭ই মে। তাঁর বয়স ছিল ৮৩ বছর।
শিব কুমার শর্মা: প্রখ্যাত এই সন্তুর বাদক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১০ই মে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
কৃষ্ণ কুমার কুন্নথ (কেকে): বলিউডের এই সঙ্গীত শিল্পী ৩১ মে কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর।
নির্মলা মিশ্র: স্বনামধন্য এই বাঙালি সঙ্গীত শিল্পীর হৃদরোগে মৃত্যু হয় ৩১ জুলাই। তাঁর বয়স ছিল ৮১ বছর।
সমর বন্দ্যোপাধ্যায়: বদ্রু ব্যানার্জি নামে পরিচিত এই বাঙালি ফুটবল খেলোয়ারের বার্ধক্য জনিত বিভিন্ন অসুখের কারণে মৃত্যু হয়েছিল। ৯২ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যু হয় ২০ অগাস্ট।
দ্বিতীয় এলিজাবেথ: বার্ধক্য জনিত কারণে ৯৬ বছর বয়সে ব্রিটেনের রানীর মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর মৃত্যু হয়েছিল ৮ সেপ্টেম্বর।
দিলীপ মহলানবিশ: ওআরএস- এর স্রষ্টা এই বাঙালি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বার্ধক্যজনিত রোগের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যু হয় ১৬ই অক্টোবর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
পিনাকি চৌধুরী: জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত বাঙালি চিত্রপরিচালকের মৃত্যু হয়েছিল দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে। অক্টোবর মাসের ২৪ তারিখ তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।