সিওল: দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলের (Seoul, South Korea) কাছে অবস্থিত বস্তি এলাকায় (Shanty Area) শুক্রবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সেদেশের দমকল কর্তৃপক্ষ (Fire Service Authority) সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অগ্নিকাণ্ডের (Fire Incident) জেরে প্রায় ৬০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত গিয়েছে। এই ঘটনায় প্রায় ৫০০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে খবর। যদিও হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। এদিন সকাল ৬টা ২৭ মিনিট নাগাদ (স্থানীয় সময়) দক্ষিণ সিওলের গুরিয়ং গ্রামে (Guryong Village) আগুন লাগে। ঘনজনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত এই গ্রামে অন্তত ৬৬০টি পরিবার বসবাস করত বলে খবর। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিক অবস্থায় খবর ছিল, আগুন নেভানোর কাজে সেদেশের ফায়ার সার্ভিসের (Fire Service) ২৯০ জন কর্মীকে নিযুক্ত করতে হয়েছিল, আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে ১০টি হেলিকপ্টারকেও (Helicopter) ব্যবহার করতে হয়।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: মাঘের শীত রাহুলের গায়ে, কাশ্মীরে ঢুকে উইন্ডচিটার গায়ে চাপালেন
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে ২,৭০০ স্কোয়ার-মিটার (২৯,০০০ স্কোয়ার-ফুট) অঞ্চলে ৬০টি বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে নামা সেদেশের ফায়ার সার্ভিসের আধিকারিকদের বক্তব্য, প্রায় ৬০০ জন ফায়ারফাইটার (Firefighters), পুলিশ অফিসার (Police Officers) এবং সেনাকর্মীকে (Troops) এই কাজে নামাতে হয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইয়েওল (Yoon Suk-yeol, President of South Korea) এই মুহূর্তে সুইজারল্যান্ডে (Switzerland) আছেন, সেখানে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে (World Economic Forum) যোগ দিয়েছেন তিনি। মুখপাত্র কিম ইয়ুন-হাই (spokeswoman Kim Eun-hye) জানান, সেখান থেকেই প্রেসিডেন্ট যাবতীয় খোঁজখবর নিয়েছেন এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যতটা কমানো যায়, সেই লক্ষ্যে তিনি ফায়ারফাইটার এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (Equipment) ব্যবহারেরও নির্দেশ দেন।
সেদেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী লি সাং-মিন (Interior Minister Lee Sang-min) সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো এবং আশপাশের এলাকায় বাসিন্দাদের সুরক্ষার বিষয়টিও যেন দেখা হয়। এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি (Asia’s Fourth-Largest Economy) হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ কোরিয়া। এই বস্তি এলাকা এই দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক বৈষম্যের (Economical Inequity) প্রতীক হিসেবে পরিচিত। দক্ষিণ কোরিয়ার হাতে গোনা যে সমস্ত বস্তি অঞল রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম এটি। এলাকাটি ঘনজনবসতিপূর্ণ হওয়ায় অগ্নিকাণ্ড, বন্যা (Flood) এবং অন্যান্য বিপর্যয় (Other Disasters) প্রবণ। এখানকার বেশিরভাগ বাড়িই কার্ডবোর্ড এবং কাঠ (Cardboard and Wood) দিয়ে তৈরি। এছাড়া, এই বস্তিতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপত্তা (Safety) এবং স্বাস্থ্যজনিত (Health) সমস্যাও রয়েছে। ২০১৪ সালেও এই বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। এরপর, সরকারের পক্ষ থেকে এই এলাকায় উন্নয়ন ও স্থানান্তরের (Relocation) জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা হলেও, জমি মালিক (Landowners), বাসিন্দা (Residents) ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে মতবিরোধের কারণে কাজ বেশিদূর এগোয়নি। এখানকার বেশিরভাগ বাসিন্দাই বেআইনিভাবে বসবাস করেন, ফলে জমি মালিকদের ক্ষতিপূরণ (Compensations) দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সঠিক সমাধানে আসতে পারেনি। এদিকে, শুক্রবারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মেয়র ওহ সে-হুন (Mayor Oh Se-hoon) এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে অনত্র পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয়র পদক্ষেপের পরিকল্পনা তৈরি করতে।