সপাটে চড়! না, কোনও রেয়াত নেই। গায়ে যত জোর আছে তত জোর লাগিয়েই চড় মারতে হবে প্রতিপক্ষকে। না হলে যে আপনি হেরে যাবেন। না মশাই, কোনও আজগুবি কথা নয় এটা বাস্তব। আরএক্সএফ স্ল্যাপ ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপে এটাই হয়। আপনার চড়ের কত জোর তার ওপরেই টিকে আছে আপনার সাফল্য। ভাবছেন তো আদৌ এরকম চ্যাম্পিয়নশিপে লোকে অংশগ্রহণ করে! আলবাত করে, চার লাখ টাকার পুরস্কার পেতে অনেকেই এক গাল কেন দু গালেই চড় খেতে রাজি। তবে এখানেই শেষ নয় এই অঙ্কের অর্থের সঙ্গে দেওয়া হয় সোনার চমকদার একটা বেল্ট। সব মিলিয়ে প্রাপ্তিযোগ ভালই।
শুনে নিশ্চয় বেশ মজা পেয়েছেন অনেকেই। অনেকে হয়তো দিবাস্বপ্ন দেখে ফেলেছেন অফিসে আপনার অপছন্দের সহকর্মীকে যদি প্রতিপক্ষ করা যায় বেশ হবে! কেউ হয়ত ভাবছেন বন্ধুদের দলে সব থেকে বিচ্ছু যেটা তাকে এই ভাবে শায়েস্তা করতে পারবেন। ছোটবেলার বন্ধু ঠিকই কিন্তু টিফিন চুরি থেকে প্রেম চুরি কোনও কিছুই বাদ রাখেনি সে! এই তো সময়, মনের সুপ্ত বাসনাগুলো চরিতার্থ করার। তবে এত কিছু সাত পাঁচ ভাববার আগে ভুলে যাবেন না চড় মারলেই চলবে না সমানভাবে একের পর এক চড় নির্বিবাদে হজম করতে হবে।
AND HE WON THE WHOLE THING! pic.twitter.com/vE8vQAvO94
— Matysek (@Matysek88) January 16, 2023
চড়ের চ্যাম্পিয়ানশিপ শুনে যতটা আমুদে মনে হচ্ছে বাস্তবে এটা কিন্তু বেশ যন্ত্রণাদায়ক। কারণ খেলার নিয়ম, একটি খাঁচার মধ্যে দু’জন প্রতিপক্ষকে পুড়ে দেওয়া হবে। দেওয়া হবে চকের গুঁড়ো। চকের গুঁড়ো হাতে নিয়ে এবার চড়ের পালা, এক…দুই…তিন কষে চড়। আর এই চড় খেয়েই মুখের পুরো হুলিয়া বদলে গেল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী কোমসা সোরিনের।
শেষ পর্যন্ত সোনালী বেল্ট ও চার লক্ষ টাকা সবই পেলেন রোম্যানিয়ান এই চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ী ব্যক্তি। কিন্তু মাশুলটা মনে হয় একটু বেশিই দিতে হল তাঁকে। চড়ের পর চড় খেয়ে মুখের একটা দিক বীভত্স ভাবে ফুলে গেছে কোমসা সোরিনের। একই অবস্থা তাঁর প্রতিপক্ষেরও। মুখ শুধু ফুলেই যায়নি। গাল ফেটে রক্ত বেরতে শুরু করে। এই স্ল্যাপ ফাইটিং চ্যাম্পিয়ানশিপের ভিডিয়ো ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়। বলা বাহুল্য টুইটারে ভিডিয়োটি পোস্ট হওয়া মাত্রই ভাইরাল।
ভিডিয়োর কমেন্ট বক্সে একেবারে টুইটের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। জানা গিয়েছে এই প্রতিযোগিতায় খেলা চলে ১০ রাউন্ড পর্যন্ত। কোমসা সোরিনের চড় খেয়ে আর নিজেকে সামলাতে পারেননি তাঁর প্রতিপক্ষ। খেলা ছেড়ে দেন তিনি, জয়ী হন কোমসা সোরিন। তবে এই ভিডিয়ো দেখে একদিকে যেমন কোমসা সোরিনের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন কেউ কেউ। তেমনি আবার নেটিজেনদের অধিকাংশ এই প্রতিযোগিতার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অনেকে আবার এক ধাপ এগিয়ে জিজ্ঞেস করে বসেন আমি এঁদের জীবনদর্শন কী তা জানতে চাই, এরা কারা যারা এ রকম একটা অর্থহীন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।