খার্তুম: সুদানে (Sudan) সামরিক বাহিনী (Military) ও আধাসামরিক বাহিনীর (Paramilitary) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৬ জন। আহত প্রায় ৬০০ জন। বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে সেদেশের রাজধানী খার্তুম (Khartoum)। আধাসামরিক বাহিনীদের তরফে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি ভবন, খার্তুম বিমানবন্দর সহ শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলির দখল নিয়েছে। যদিও সেনা সেই দাবি খারিজ করে জানিয়েছে, আধা সামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’-এর দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রবিবার সকালেও সুদানের খাঁ-খাঁ করা রাস্তায় বোমা-গুলির শব্দ। কেঁপে ওঠে বড় বড় বিল্ডিংগুলি। সুদানের বায়ুসেনার তরফে পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত মানুষকে ঘরে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। এই বায়ুসেনাই বর্তমানে লাগাতার সুদানের আধাসামরিক বাহিনী ব়্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (RSF) ঘাঁটিগুলিতে আকাশপথে গোলাবর্ষণ করে চলেছে। আকাশপথে দিনভর চক্কর কাটছে যুদ্ধ বিমান। আধাসেনার সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে লাগাতার বোমাবর্ষণ করছে তারা।
আরও পড়ুন:Lyrid| আকাশ থেকে ঝরে পড়বে ২৭০০ বছরের আলো
এদিকে সুদানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক ভারতীয় নাগরিক। ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু প্রসঙ্গে সুদানের ভারতীয় দূতাবাস এক টুইট বার্তায় লিখে জানিয়েছে, মিঃ অ্যালবার্ট অগেস্টিন সুদানের ডাল গ্রুপ কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। তিনি একজন ভারতীয় নাগরিক। গতকাল একটি বুলেটের আঘাতে জখম হয়ে মারা গিয়েছেন তিনি। ভারতীয় দূতাবাসের তরফে আরও জানানো হয়েছে, তারা অ্যালবার্ট অগেস্টিনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। পাশাপাশি তাঁর মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করার জন্য সুদানের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে।
শনিবার সুদানে সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে সেদেশের আধাসামরিক বাহিনীর। একে অপরের ঘাঁটি (Base) লক্ষ করে উভয়েই হামলা চালায় তার পরপরই খার্তুমেই বিস্ফোরণের (Explosions) ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, এই সংঘর্ষের মূলে রয়েছে সামরিক নেতা আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান এবং তাঁর অধীনস্থ আধাসামরিক কমান্ডার মহম্মদ হামদান দাগলোর বিবাদ। আধাসামরিক বাহিনীর র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সকে (আরএসএফ) সেনার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া নিয়ে এই বিবাদ শুরু হয় বিগত কয়েক সপ্তাহ আগে। সেই বিবাদের জেরেই শনিবার থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে বন্দুক তুলে নিয়েছে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অক্টোবরে সেনা প্রধান বুরহানের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানের (Coup) মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। দেশের আধাসামরিক বাহিনীও তাতে সামিল ছিল। কিন্তু তারপর থেকে দেশে এখনও গণতন্ত্রের শাসন ফেরেনি। আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে এবিষয়ে সমাধান সূত্রে আসতে পারেনি সেনা। দুই পক্ষই একে অপরের বিরোধিতা করে যাচ্ছে।