কলকাতা টিভি ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৭১ সালের ২ এপ্রিল৷ ওই দিন রেডিয়োর এক খবরে চমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব৷ রবার্তো কুইনটানিলাকে গুলি করে খুন করেছেন মনিকা এর্টেল৷ হইচই পড়ে যায় দক্ষিণ আমেরিকায়৷ উল্লাসে ফেটে পড়েন চে গ্যেভারার (Che Guevara) অনুগামীরা৷ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চে গ্যেভারার পাগল অনুরাগীদের কাছে মনিকা ওই দিনের পর থেকে হয়ে ওঠেন পূজনীয়৷ বিশ্ব বরণ্যে আর্জেন্টিনার বিপ্লবী নেতা চে-র মৃত্যুর বদলা নিয়েছিলেন এই সাহসিনী৷ বয়স তখন মাত্র ৩৪ বছর৷ এর দু’বছর পর তাঁকেও খুন হতে হয়৷ ততদিনে ‘চে গ্যেভারার খুনের প্রতিশোধ’ নেওয়া বিজয়িনীর তকমা জুটে যায় মনিকার৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে জার্মানির মিউনিখে জন্ম মনিকার৷ বাবা ছিলেন নাৎসি ভাবধারায় বিশ্বাসী৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাঁরা চলে আসেন বলিভিয়াতে৷ নাৎসি পরিবার ও ভাবধারার পরিবেশে বড় হলেও মনিকা ছিলেন ভিন্ন৷ বাবার মতাদর্শকে ছুড়ে ফেলে মার্কসবাদী ও সমাজতান্ত্রিক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে পড়েন তিনি৷ তখন চে গ্যেভারা কিংবদন্তি মার্কসবাদী নেতা৷ লক্ষ লক্ষ অনুরাগীর মতো মনিকাও হয়ে ওঠেন তাঁর ভক্ত৷ সেই চে ১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর বলিভিয়ার সেনার হাতে মারা যান৷ প্রিয় নেতার আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখতে মনিকা নাম লেখান বলিভিয়ার ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মিতে৷ চে-র মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠা করতে হাতে তুলে নেন অস্ত্র৷ নেন গেরিলা প্রশিক্ষণ৷
১৯৭১ সালে মনিকা চলে আসেন হামবুর্গে৷ এক বিশেষ মিশনে৷ ওই সময় বলিভিয়াতে ছিলেন কর্নেল রবার্তো কুইনটানিলা৷ অভিযোগ, চে-কে হত্যার পর তাঁর মৃত্যুর প্রমাণ ও শনাক্তকরণের জন্য হাত কেটে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন এই রবার্তো৷ তাঁকে তিনবার গুলি করে খুন করে পালিয়ে যান মনিকা৷ এই ভাবেই চে-র খুনের বদলা নেন এক জার্মান-বলিভিয়ান গেরিলা মেয়ে৷ যদিও বেশিদিন পালিয়ে বাঁচতে পারেননি তিনি৷ ১৯৭৩ সালে মে মাসে বলিভিয়ার সেনার হাতে ধরা পড়ে যান৷ নৃশংস অত্যাচারের পর হত্যা করা হয় তাঁকে৷ আজ পর্যন্ত মনিকার দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি৷
আরও পড়ুন: Red King Cobra: চীন, ভিয়েতনামের দু’মুখো লাল কিং কোবরা উদ্ধার বসিরহাটে