কাবুল: মহিলাদের (Women) খুশির ইদ (Eid) পালনে বাধা, আফগানিস্তানে অব্যাহত তালিবানি ফতোয়া। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মহিলাদের বিষয়ে একের পর এক ফরমান জারি করে চলেছে তালিবান প্রশাসন (Taliban Administration)। কখনও মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করা, আবার কখনও কর্মক্ষেত্র থেকে মহিলাদের দূরে রাখা, বা রাস্তায় বের হতে গেলে মহিলাদের সঙ্গে পুরুষ নিয়ে বের হওয়ার নির্দেশ। এবার মহিলাদের খুশির ইদে সামিল হতেও বাধা দিল তালিবান সরকার।
গোটা বিশ্বের তামাম মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ শনিবার পালন করেছে খুশির ইদ। দিল্লির জামা মসজিদ হোক বা কলকাতার নাখোদা, কিংবা মক্কা-মদিনা, উৎসব উপলক্ষে সাজিয়ে তোলা হয়েছে সমস্ত মসজিদ। বেশ কিছু জায়গায় বিশেষ প্রার্থনারও আয়োজন করা হয়। কিন্তু, সেখানে আফগানিস্তানে মুসলিম মহিলাদের ইদের উৎসবে যোগ দিতে দিল না সে দেশের তালিবান সরকার। ফতোয়া জারি করে ইদ-উল-ফিতর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেওয়া হল না আফগানিস্তানের দুই প্রদেশের মহিলাদের। সূত্রের খবর, দেশের বাঘলান এবং তাখর প্রদেশে কোনও মহিলাদের ইদের উৎসবে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি আফগানিস্তানের রেস্তরাঁয় মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে তালিবান সরকার। মহিলাদের মধ্যে হিজাব না পরে রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ প্রশাসনের। যা ইসলামের পরিপন্থী। এই অজুহাত খাড়া করে কড়া সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে তালিবান সরকার। মহিলাদের রেস্তরাঁয় প্রবেশে তালিবানের এই ফতোয়া আপাতত আফগানিস্তানের হেরাত শহরের কিছু হোটেলে প্রযোজ্য হয়েছে। আগামীদিনে গোটা আফগানিস্তান জুড়েই এই ফতোয়া চালু হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। যে সমস্ত রেস্তরাঁয় অনেকটা খোলামেলা পরিবেশ রয়েছে, গাছগাছালি এবং প্রশস্ত বাগান রয়েছে, সেখানেই মহিলাদের ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে। এই রেস্তরাঁয় কেবল পুরুষরাই যেতে পারবেন। তবে তাঁরা পরিবার বা কোনও মহিলাকে সেখানে নিয়ে যেতে পারবেন না।
কয়েকদিন আগেই পূর্ব আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশ সরকার রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংস্থাগুলিতে কর্মরত আফগান নারীদের কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বর্তমানে আফগানিস্তানে রাষ্ট্রপুঞ্জ পরিচালিত একাধিক মানবাধিকার সংস্থা রয়েছে। সংস্থাগুলিতে ৩ হাজারের বেশি আফগান মহিলা কর্মরত। এর মধ্যে নানগারহার প্রদেশে কর্মরত মহিলার সংখ্যা প্রায় ৪০০। স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার চাকরির ক্ষেত্রেও তালিব সরকার মহিলাদের অধিকারে রাশ টানতে চাইছে। পূর্ব আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশের সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তেনিও গুতারেস। নিষেধাজ্ঞাটি প্রত্যাহার করার জন্য তালিব প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।