রিষড়া: নতুন করে অশান্ত হুগলির (Hooghly) রিষড়া (Rishra)। সোমবার গভীর রাতে উত্তেজনা ছড়ায় রিষড়ার ৪ নম্বর রেলগেট এলাকায়। ব্যাপক বোমাবাজি হয়। পুলিশকে (Police) লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। ট্রেন (Train) লক্ষ্য করেও ছোড়া হয় ইট-বোমা। রেল গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পুলিশের গাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনাও ঘটে বলে খবর। এদিকে গোলমালের জেরে হাওড়া স্টেশন থেকে মেন লাইনের সমস্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে রাত দশটা থেকে। রাত যত বাড়তে থাকে স্টেশনে স্টেশনে ততই বাড়তে থাকে ভিড়। একের পর এক স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে লোকাল ট্রেন। আটকে যায় দূরপাল্লার ট্রেনও। রিষড়ার অশান্তি শ্রীরামপুর, মাহেশেও ছড়িয়েছে।
পুলিশকে লক্ষ করেও পাথর ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পাল্টা ইট ছুড়তে দেখা গিয়েছে পুলিশকেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় নামানো হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিভিন্ন এলাকায় চলে টহলদারি। রিষড়ায় যে যে এলাকায় উত্তাপ ছড়িয়েছে সেই সব এলাকায় এরিয়া ডমিনেশনের কাজ চলছে। কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরির কাজ চলছে। রিষড়া এলাকায় প্রচুর গলি রয়েছে, সেখানেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গলিতে কোনও জমায়েত রয়েছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। রাতে সমস্যা হয়েছে বলে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেও সমস্যা হচ্ছে।
পুলিশ রিষড়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে পরিষেবা। রাত ১টা ৫ মিনিটে রিষড়া স্টেশন থেকে ছাড়ে আপ হাওড়া-কাঠগোদাম বাঘ এক্সপ্রেস। হাওড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া রাত ৯টা ৩০ মিনিটের ব্যান্ডেল লোকাল ১টা ৮ মিনিটে রিষড়া স্টেশন থেকে ছাড়ে। এর পর ছাড়তে শুরু করে পর পর দাঁডিয়ে থাকা ট্রেনগুলি।
প্রসঙ্গত, রানবমীর (Ramnabami) মিছিল ঘিরে রবিবার রাতে অশান্ত হয় রিষড়া (Rishra)। বিভিন্ন এলাকা থেকে এক জায়গায় জড়ো হওয়ার পর মিছিল মাহেশের রথের সামনে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, কিছুটা যাওয়ার পর উল্টোদিক থেকে মিছিলের উপর ইটবৃষ্টি শুরু হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ মিছিলে ছিলেন। ইট পড়ার পরেই দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি চলে। একাধিক দোকান, বাড়িতে ভাংচুর চালানো হয়। চলে অগ্নিসংযোগ। পুলিশ লাঠি এবং টিয়ার গ্যাস চালায়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে হুগলি জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা অকুস্থলে পৌঁছে যান। বিভিন্ন জায়গায় বসে পুলিশ পিকেট। সোমবার সকালেও চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা টহলদারি চালান এলাকায়।
সেই ঘটনাকে ঘিরে সোমবার দিনভর সরগরম থাকে রাজ্য রাজনীতি। রিষড়ায় যাওয়ার পথে বাধার মুখে পড়েন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রিষড়ায় ঢোকার আগেই কোন্নগরে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। ব্যারিকেড করে রাস্তা আটকায় পুলিশ। যার জেরে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা যায় সুকান্তকে। প্রতিবাদে কোন্নগরে জিটি রোড অবরোধ করে বিজেপি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর অবরোধ ওঠে। তারপরে রাত দশটা নাগাদ ফের ৪ নম্বর রেল গেট সংলগ্ন এলাকায় গোলমাল শুরু হয়। পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।