Friday, July 4, 2025
Homeকলকাতাগদিঘরে আঁধার, চাষের কাজ করছেন চিৎপুরের যাত্রাশিল্পী

গদিঘরে আঁধার, চাষের কাজ করছেন চিৎপুরের যাত্রাশিল্পী

Follow Us :

সামনেই রথযাত্রা। এই দিনটি যাত্রাশিল্পীদের জন্য দুর্গাপুজোর সমান। চিৎপুরের একের পর এক যাত্রাদলের অফিসে একদিনের ধুমধাম করে পুজো হতো। মফস্সল, গ্রাম থেকে যাত্রার বায়না হতো এই দিনে। তবে করোনার জেরে চিৎপুরের গলি এখন অন্ধকারে আচ্ছন্ন। মন ভালো নেই যাত্রা পরিবারের সদস্যদের। গত দুই বছর যাত্রাশিল্পে চলছে দুর্দশা। যাত্রা দলের এক প্রযোজক হারাধন রায়ের কথায়, “গত বছর দ্বিতীয় ঢেউ আসার আগে তাও কিছু পালা করতে পেরেছিলাম। তবে এই বছর সেরকম কিছু আশা করছি না। ঝড় ,সাইক্লোন গ্রামগুলোকে তছনছ করে ফেলেছে। গ্রামের বহু যুবক যারা আগে বাইরে কাজ করত, তারা এখন বেকার, লোকের হাতে টাকা নেই। এমনিতেই টিভি, ওয়েব সিরিজের কারণে যাত্রাপালার ব্যবসা কমেছে, এখন করোনার জন্য অবস্থা খুব খারাপ। এ-রকম আরও দু’বছর চললে, এই শিল্পকে আর বাঁচানো যাবে না।”
করোনার জেরে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত অল্প বাজেটের শিল্পীরা। তাঁরা না পারছেন বিকল্প পেশায় যেতে, না পাচ্ছেন এই কাজ। অনেক ছোটখাট শিল্পী বিকল্প পেশা খুঁজে নিয়েছেন। কেউ গ্রামে ফিরে চাষের কাজ, একশো দিনের কাজে ব্যস্ত।

তবে আশাবাদী অনেকেই৷ অন্য একটি দলের প্রযোজক কনক ভট্টাচার্যের মতে,” আমরা তৈরি থাকব, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ না এলে আশা করছি কিছু বায়না আসবে। তবে এই বছর আমরা কোনও বিজ্ঞাপন দিইনি কাগজে, কারণ ট্রেন চলে না আসবে কী করে। তাই রিহার্সাল করে আমরা তৈরি থাকব৷ বায়না এলে যেন কাজ করতে পারি। ইচ্ছে আছে, রথের দিন চিৎপুরের যাত্রা অ্যাকাডেমিতে পুজো করে ফেসবুক লাইভ করব। গ্রামের দর্শকদের কাছে একটা বার্তা যাবে যে, আমরা তৈরি। আসলে অনেকেই আমাদের ফোন করছে খোঁজখবর নিচ্ছে, তবে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য আমরা বুঝতে পারছি না পরিস্থিতি কী হবে৷”
যাত্রাশিল্পীদের অনেকেই অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন, যাত্রা অ্যাকাডেমির তরফ থেকে কিছু সাহায্য করছে।তবুও বেশকিছু শিল্পী ও কলাকুশলীর অবস্থা খুব খারাপ।
যাত্রা অভিনেত্রী রুমা দাশগুপ্ত জানালেন, “যাত্রা ছাড়া আর তো কিছুই জানি না। খুব অসহায় অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলেছি, আশা রাখি আগামী বছর অবস্থার উন্নতি হবে। সিরিয়ালও তেমন কাজ পাচ্ছি না। আমাদের ভরসা রয়েছে শুধুমাত্র যাত্রার উপর। ”
শিল্পী ছাড়াও অনেক কলাকুশলী যাঁরা এই শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, মিউজিক প্লেয়ার, প্রপস দেখাশোনা করেন যাঁরা, সকলেই নানা সমস্যার মুখে পড়েছেন ।


করোনার তৃতীয় ঢেউ না এলে যাত্রাশিল্প হয়তো আশার আলো দেখবে এমনই আশা করছে যাত্রাশিল্পীদের অনেকে।
আপাতত চিৎপুরের যাত্রা গলি অনিশ্চয়তা মধ্যেই দিন কাটাচ্ছে। কোথাও কোন পালার রিহার্সাল চলছে ভালো দিনের আশায়। “কান্না ভেজা মায়ের আঁচল ” বা ‘ভোরের আকাশে একমুঠো আবীর” আবার সামিয়ানার আলোয় দেখা যাবে কি না, সেদিকেই তাকিয়ে যাত্রা পরিবার।

RELATED ARTICLES

Most Popular


Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39