কলকাতা: গোটা রাজ্য লাল ঝান্ডার জয় দেখতে চাইছে। এমনটাই দাবি করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে রাজ্য কমিটির মুখপত্রে মঙ্গলবার সেলিম লিখেছেন, রাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী সমস্ত শক্তিকে এককাট্টা করে স্থানীয় আদায়যোগ্য দাবিতে মানুষকে জড়ো করতে হবে। একদিনে সাফল্য আসে না। ধারাবাহিক লাগাতার প্রয়াসে জয় ছিনিয়ে আনতে হবে। আমরা অবশ্যই সম্ভাবনার মুখে দাঁড়িয়ে আছি। রাজ্যের মানুষকে লাল ঝান্ডার জয়ের সম্ভাবনা দেখাতে হবে।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের এই দাবির সঙ্গে বাস্তবের কতটা সম্পর্ক আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহল। সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত ভোটে সামগ্রিকভাবে সিপিএম তেমন ছাপ ফেলতে পারেনি। যদিও সিপিএমের দাবি, শাসকদলের সন্ত্রাস, সরকারি আমলা, পুলিশের দাদাগিরির মধ্যেও যেখানে বামেরা রুখে দাঁড়াতে পেরেছে, সেখানেই ভালো ফল হয়েছে। আবার জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছেন। যদিও তার আগে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ১৮ মাস ধরে বেতন নেই মৎস নিগমের অস্থায়ী কর্মীদের
দলীয় মুখপত্রে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক লিখেছেন, এখানে বামপন্থীদের দুর্বল করে দক্ষিণপন্থীরা কেবল কর্পোরেট লুটে ব্যস্ত, মানুষের জীবনজীবিকা নিয়ে তারা চিন্তিত নয়। আরএসএসের তন্ত্র আর তৃণমূলের যন্ত্র এখানে এক হয়ে কাজ করছে। সেই জন্যই দুর্নীতি মামলায় কেবল তল্লাশি হচ্ছে। কিন্তু কাউকে ধরা হচ্ছে না। দুর্নীতি আর দুষ্কৃতীতন্ত্রের যোগে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ভয় একাংশের মানুষকে নিষ্ক্রিয় করে রাখে, একাংশকে তাঁবে নিয়ে আসে। কিন্তু ক্ষোভে থাকা মানুষকে নিয়ে লাগাতার সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নতুন পরিসর তৈরি করতে পারে কমিউনিস্ট পার্টিই।
সেলিমের মতে, সংগ্রামে যে নতুন অংশ আসছে, তাকে সংগছনের অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। মূর্তি গড়তে হলে আগে মাটি সংগ্রহ করতে হয়। যে কাঁচা মাটি এল, তাকে মেখে উপযোগী করে নিতে হবে। নতুনকে নিয়ে আসায় বাছাই করার নামে সংকীর্ণতা দেখালে চলবে না। তিনি লিখেছেন, মানুষকে বিশ্বাস করতে হবে, ভরসা করতে হবে। বিড়ি শ্রমিক, ইটভাটার শ্রমিক, খেতমজুর, আদিবাসী, অনগ্রসর, সংখ্যালঘুদের মধ্য থেকে নেতা তৈরি করতে হবে। তাদের অংশগ্রহণের জায়গা করে দিতে হবে। আমাদের সংগঠনের ভিতরেও তাঁদের এমন ভাবে নির্ভয়ে কাজ করতে দিতে হবে, যাতে তাঁরা কোণঠাসা বোধ না করে। না হলে সংগঠন ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়ে যাবে।