কলকাতা: বিদ্যালয় শিক্ষকদের কোচিংয়ের দরজায় তালা পড়তে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর প্রাইভেট টিউশন নিয়ে আরও কড়া শিক্ষা দফতর। সরকার, সরকারপোষিত, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোনও প্রকার প্রাইভেট টিউশন করতে পারবেন না। বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের তরফে জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নামের তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করার পক্ষে ছিল বামফ্রন্ট সরকার। সেই আমলেও মূলত মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উদ্যোগে স্কুল ও কলেজ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করা হয়েছিল। তারপর কিছুদিন কড়াকড়ি চললেও তারপর থেকে যে কে সেই দশা চলতে থাকে। অনেক অভিভাবকের অভিযোগ, স্কুল-কলেজ শিক্ষকরা প্রায় ডাক্তাদের মতো নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ান না। বরং নিজের বাড়িতে বা অন্য কোনও কোচিংয়ে পড়াতে বেশি পছন্দ করেন। বেতন ছাড়াও অতিরিক্ত বিশাল অঙ্কের টাকা রোজগার করেন তাঁরা এই পথে। যার কোনও আয়করও জমা দিতে হয় না। শুধু তাই নয়, অভিভাবকদের আরও অভিযোগ, বিশেষ কোনও শিক্ষকের কাছে না-পড়লে পরীক্ষায় নম্বর পাওয়া যায় না। এমনকী কেউ কেউ ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে কোচিংয়ে যেতে বাধ্য করেন।
আরও পড়ুন: Asansol Mamata: একশো দিনের কাজের টাকা চাইতে এবার নিজে দিল্লি যাব: মুখ্যমন্ত্রী
এইসব অভিযোগের নিরিখেই এবার বিদ্যালয় শিক্ষা দফতর এই নোটিস জারি করল। প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে উদ্দেশ করে লেখা ওই নোটিসে তাঁদের বলা হয়েছে, শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শিক্ষকদের বিচারবুদ্ধির প্রতি বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছেন। মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রয়াণবার্ষিকীতে তাঁর সমাধিস্থলে আয়োজিত শ্রদ্ধানুষ্ঠানে গিয়ে ব্রাত্য বলেন, নিয়মের বেড়াজাল তৈরি করার আগে আমি আশা করব, শিক্ষকরা নিজেরাই তাঁদের বিবেকবুদ্ধি দিয়ে কাজ করবেন। তাঁদের বিচারবুদ্ধিই সর্বাগ্রে জরুরি। তাতেও যদি দেখা যায়, কাজ হচ্ছে না, তখন বিধিনিষেধের উপর জোর দেওয়া হবে।