কলকাতা : আছে ক্লাসরুম, আছে চক, আছে টিচারের বকবক…সেই গানই আজ মনে পড়ছে। সেই সব চেনা জিনিসই আজ ফিরে এসেছে। পড়ুয়াদের ভিড়ে যেন প্রাণ ফিরে পেল ক্লাসরুম। হারিয়ে যাওয়া কোলাহল। টিফিনে ভাগাভাগি। বন্ধুদের সঙ্গে কত না বলা কথা। আজ সে সব ফিরে পাওয়ার দিন।
এত কিছুর মাঝেও আজ নেই অনেক কিছুই । নেই ঘেঁষাঘেঁষি করে বসা। নেই একছুটে স্কুলের মাঠ পেরনো। আজ আর নেই টিফিন ভাগ করে খাওয়া। অনেক নেই-এর মাঝে আছে মাস্ক পরা। আছে কিছু সময় অন্তর অন্তর হাত ধোওয়া। স্যানিটাইজেশন।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে স্কুলের গেটে পা রাখল পড়ুয়ারা। আর ‘গুগল মিট’-এর গুগল নয়। এবার শুধুই ‘মিট’। অনলাইন ক্লাসের থেকে মুক্তি মিলল পড়ুয়াদের। করোনা বিধি মেনেই স্কুলের ক্লাস শুরু। সেই পুরনো চেনা গন্ধে মাতোয়ারা পড়ুয়ারা।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই খুলে গিয়েছে সমস্ত স্কুল। পড়ুয়াদের স্কুলের ভিতর ঢোকার আগেই পুরো স্যানিটাইজ করানো হচ্ছে। পাশাপাশি দেখা হচ্ছে যাতে সকলের মুখে মাস্ক থাকে। এতদিন ঘরবন্দি থাকার পর এক পড়ুয়াদের বক্তব্য, ‘অনেকদিন পর স্কুলে আসতে পেরে বেশ ভালই লাগছে। দশম শ্রেণিতে ওঠার পর আর সেভাবে স্কুলের মুখ দেখা হয়নি। এতদিন পর এসে ভালই লাগছে। স্কুলের ভিতরও ভীষণ ভালভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আবার দেখা হবে ভেবে খুব আনন্দ হচ্ছে।‘
আরও পড়ুন : বন্ধনমুক্ত পড়ুয়ারা, দেড় বছর পর খুলল স্কুল
অন্যদিকে স্কুলে আসা এক ছাত্র জানায়, ‘কোভিডের জন্য ভালভাবে ক্লাস করাই যায়নি। বিজ্ঞানের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস কখনওই অনলাইনে সম্ভব নয়। অনেক বিষয় নিয়ে বোঝার অসুবিধা থেকেই যাচ্ছিল। আর বন্ধুদের সঙ্গে কথা হওয়া বলতে শুধুমাত্র ওই ক্লাসের সময়টুকুতেই। স্কুলে আসতে না পারায় সেটাও প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল।‘
যতই অনলাইন ক্লাস থাকুক, সেই অনুভূতিটাই আসে না। এক পড়ুয়া বলে, ‘অফলাইন ক্লাসে বন্ধুদের পাশে বসে পড়াশোনা করার অনুভূতিই আলাদা। বাড়িতে বসে ওই স্কুলের পরিবেশ কখনওই উপভোগ করা যায় না।’
অবশেষে প্রায় ১৮ মাস পর স্কুল খোলায় পুরনো কোলাহল ফিরে এল। এতদিন পর ফের দেখা বন্ধুদের সঙ্গে। করোনাবিধি মেনেই চলছে ক্লাস। কোথাও পড়ুয়াদের ফুল আবার কোথাও পেন দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে।