সিমলা: সেটাও ছিল একটা শনিবার (Saturday)। সকাল বেলায় যে খবর হুহু করে ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের সব প্রান্তে। ওই দিন প্রয়াত হন হিমাচলপ্রদেশের বাসিন্দা ১০৬ বছরের শ্যামশরণ নেগী (shyamsaran neggi)। তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটার ছিলেন। আগামী কাল, ঠিক তার পরের শনিবার হতে চলেছে ভারতের প্রথম ভোটারকে ছাড়া নেগীর রাজ্যেরই সরকার গড়ার নির্বাচন। ১৯৫১ সাল থেকে এবছর পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে তিনি ভোট দিয়েছেন। তাঁকে নিয়ে চর্চাও হয়েছে বিস্তর। নির্বাচন কমিশন সংবর্ধনাও দিয়েছে নেগীকে। তাঁর শেষকৃত্যও হয় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়।
নির্বাচন আর নেগী সমার্থক। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ যাতে ভোটে অংশগ্রহণ করে, তার জন্য সারা দেশেই তিনি ছিলেন আইকন। নেগী বরাবরই বলে এসেছেন, ভোটাধিকারের প্রয়োগ করা মর্যাদার। তিনি প্রয়াতও হয়েছেন এই বিধানসভা নির্বাচনে (assembly election) ভোট দিয়েই। শেষবারেও বলেছিলেন, বুথে গিয়ে ভোট দেবেন। কিন্তু,শারীরিক অসুস্থতার জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের উদ্যোগে তাঁর কল্পা গ্রামে পোস্টাল ব্যালটে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়। পর দিনই তাঁর মৃত্যু হয়। নেগীর মৃত্যুর পর সব রাজনৈতিক দলের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। হিমাচলে বিজেপি, কংগ্রেস, আপ সব পার্টিই প্রচারে কম বেশি দাবি করেছে তারা নেগীর ভোট পাবে।
একটি তফসিলি অধ্যুষিত পাহাড়ি জেলা কিন্নাউর (kinnaur) । সেখানকার চিনি গ্রামে জন্ম নেগীর। যা পরে কল্পা নামে পরিচিতি পায়। পেশায় শিক্ষক নেগী ছিলেন হিমাচলপ্রদেশের (himachalpradesh) নির্বাচনী ময়দানে সম্মানের শিখরে থাকা নাম। হিমাচলের আবেগ। জওহরলাল নেহরু থেকে নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় আসীন হওয়ার দেশের প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনে তিনি সক্রিয় অংশ নিয়েছেন। একইভাবে হিমাচলের রাজনীতিতে কংগ্রেস, বিজেপির প্রতিটা উত্থানপতনেরও তিনি সাক্ষী। তাঁর মৃত্যুর পর নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তিনি দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। নেগী কাকে ক্ষমতায় দেখতে চেয়ে ভোট দিলেন, তার চেয়ে বড় জল্পনা গণতন্ত্রের উৎসবে নেগীর বার্তা কতটা প্রতিফলিত হয় তা নিয়ে। নেগীর ইচ্ছা অনুযায়ী গণতন্ত্রের উৎসবে অংশ নিয়ে কত বেশি শতাংশ মানুষ ভোট দিতে বুথে যান তার দিকে নজর নির্বাচন কমিশনের।