কলকাতা: আজ ইংরেজি নববর্ষ। আর ১ জানুয়ারি (1 January, 2023) মানেই বনভোজন-চড়ুইভাতি, ফিস্টের দিন। আনন্দ-ফূর্তি ছাড়াও এইদিনটির সকাল হল পুজো দিয়ে ঈশ্বরের কাছে গোটা বছরটা যেন সুখে-সম্পদে-সমৃদ্ধিতে কাটে, সেই প্রার্থনা করারও দিন। তাই রবিবার সকাল থেকেই রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়েও দেশের সব বড় মন্দিরে (Hindu Temple) ভক্তরা ভিড় জমান মনের আকুতি নিয়ে। কচিকাঁচাদের মঙ্গল কামনা করে পুজো দেন।
তাই শহর এবং শহর ছাড়িয়ে যে দিকেই দুচোখ যায়, সেখানেই সকাল থেকে ধরা পড়ল মন্দিরে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে ভক্তদের ঢল। বিশেষত কালী মন্দিরে (Maa Kali Temple) সারা বছরের আশীর্বাদ কামনা করে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মানুষ। তার উপর এদিনেই রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব (Ramakrishna) কল্পতরু (Kalpataru Utsav) হয়েছিলেন, সে কারণ রামকৃষ্ণভক্তদের স্রোত উপচে পড়েছে বিভিন্ন রামকৃষ্ণের স্মৃতিবিজড়িত স্থানে।
আরও পড়ুন: Cossipore Udyanbati: আজ কল্পতরু উৎসব, রামকৃষ্ণ ভক্তদের ভিড় কাশীপুর উদ্যানবাটি থেকে সর্বত্র
প্রতিবছর দক্ষিণেশ্বর (Dakshineswar) কালীবাড়িতে ১ জানুয়ারি কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে লাখো ভক্তের ভিড় জমে। এদিনও তার ব্যতিক্রম চোখে পড়েনি। কুয়াশার চাদর কাটিয়ে আকাশ ফরসা হওয়ার আগে থেকেই দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির চত্বরে চলে আসেন পুণ্যার্থীরা। অনেকে এই সুযোগে গঙ্গা স্নানটিও সেরে নেন। ভক্তি ও পবিত্র মনে লাইনে দাঁড়ানো মানুষের সারি সকাল ৯টার মধ্যেই বালি ব্রিজে উঠে যায়। তারপর বেলা যত বাড়তে থাকে, লাইন ততই বেড়ে বালি ব্রিজও ছাড়িয়ে গিয়েছে। ভবতারিণীর (Bhavatarini Kali Temple) পুজো দেওয়া ছাড়াও এইদিনে ভক্তরা রামকৃষ্ণদেবের ঘরও দর্শন করেন।
দক্ষিণেশ্বর ছাড়াও কলকাতার কালীঘাট, লেক কালীবাড়ি, বীরভূমের তারাপীঠ, সতীপীঠ কঙ্কালীতলা, নলাটেশ্বরী মন্দির, হুগলির কামারপুকুর, জয়রামবাটি, বর্ধমানের ১০৮ শিবমন্দির, তমলুকের বর্গভীমা মন্দির, কল্যাণেশ্বরী মন্দির সর্বত্র উপচে ভিড় চোখে পড়ল। এই বিশেষ দিনটির জন্য কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের তরফেও অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে। গঙ্গা সহ নদী তীরবর্তী এলাকায় পুলিশি ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে।
দক্ষিণেশ্বর বা বাগবাজারের মায়ের বাড়িতে কল্পতরু উৎসব পালন হলেও বেলুড় মঠে সেরকম কোনও অনুষ্ঠান হয় না। প্রথা মেনে ভোরবেলায় মঙ্গলারতি দিয়ে মঠের নিত্যদিনের পূজার্চনা এবং অন্যান্য কাজ হয়। এমনিতে কোনও বিশেষ অনুষ্ঠান না থাকলেও সকালবেলাতেই বিভিন্ন জায়গা থেকে নিত্যদিনের প্রাতঃভ্রমণকারী বা কিছু ভক্ত এসেছেন নববর্ষের পুণ্যপ্রভাতে ঠাকুরকে প্রণাম জানাতে, আশীর্বাদ নিতে। যত বেলা বাড়বে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসবেন। রাজ্যের অন্যান্য বিভিন্ন দ্রষ্টব্য বা পর্যটন কেন্দ্রের মতোই ভরে উঠবে বেলুড় মঠ প্রাঙ্গণ।