নয়াদিল্লি: আদালতে মামলা চলার মাঝে মেজাজ খুইয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud, Chief Justice of India)। প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, বৃহস্পতিবার একটি আবেদন অর্থাৎ পিটিশনের লিস্টিং (Listing of a Petition) নিয়ে তপ্ত বাক্যবিনিময়ের (Heated Exchange) সময় এক সিনিয়র আইনজীবীকে কড়া ধমক দেন তিনি। তাঁকে আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।
প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের জন্য জমি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানির জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল (Request for Pushing Land Related Case)। সেই সময় একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সিনিয়র আইনজীবী বিকাশ সিং (Senior Advocate Vikas Singh)-এর উপর চিৎকার (Shout) করে ওঠেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। রেগে গিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি বলেন, “চুপ করুন। এখনই কোর্ট ছেড়ে বেরিয়ে যান। আপনি আমাদের এইভাবে ভয় দেখাতে (Cower Down) পারেন না!”
আরও পড়ুন: Hathras: হাথরাসের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত
সিনিয়র আইনজীবী বিকাশ সিং হলেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন (Supreme Court Bar Association – SCBC)-এর সভাপতি (President)। বার দেশের শীর্ষ আদালতকে চাপ দিচ্ছিল, সুপ্রিম কোর্টের বরাদ্দ জমি থেকে আইনজীবীদের জন্য একটা চেম্বার ব্লক (Chamber Block for Lawyers) করার জন্য পিটিশন দাখিল করা হয়েছে, তার শুনানি চালানো হোক। গত ছয় মাস ধরে আইনজীবীরা এই মামলার লিস্টিংয়ের জন্য লড়াই করে আসছে।
এই কথা শোনার পর, বিচারপতি চন্দ্রচূড় রেগে গিয়ে বলে ওঠেন, “আপনি এই ধরনের দাবি জানাতে পারেন না। এমন একটা দিনের কথা বলুন, যেদিন আমরা গোটা দিনটা বসে কাটিয়েছি?”
এরপর সিনিয়র আইনজীবী পাল্টা বলেন, “আমি একবারও বলছি না যে আপনি গোটা দিন চুপচাপ বসে থাকেন। আমি শুধু বিষয়টাকে তালিকাভুক্ত করার কথা বলছি। যদি না করা হয়, তাহলে ধর্মাবতার আপনার বাড়ির দরজা পর্যন্ত বিষয়টাকে নিয়ে যাব। আমি চাই না, বারের সঙ্গে এরকম করা হোক।”
বিচারপতি চন্দ্রচূড় তখন চিৎকার করে বলেন, “প্রধান বিচারপতিকে এভাবে হুমকি দেবেন না। এটা কী ধরনের আচার-আচরণ?” তিনি আরও বলেন, “আমি প্রধান বিচারপতি। আমি ২০০০ সালের ২৯ মার্চ থেকে এখানে আছি। আমি ২২ বছরের পেশাদার। বারের কোনও সদস্য (Members of the Bar), কোনও মামলাকারী (Litigant) কিংবা অন্য কেউ, কোনওদিন কাউকে আমি ধমকানোর সুযোগ দিইনি। আমার কেরিয়ারের শেষ দুই বছরেও আমি সেটা হতে দেব না।” এরপর হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, “আপনাকে সাধারণ মামলাকারী হিসেবেই গণ্য করা হবে। অনুগ্রহ করে আমাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করবেন না, যা আপনি চান না।” এই তপ্ত বাক্যবিনিময়ের সময়, বিচারপতি চন্দ্রচূড় বারের সভাপতিকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, গলার স্বর উঁচিয়ে (Raising Voice) যেন তিনি কথা না বলেন।
আইনজীবী বিকাশ সিং উত্তেজিত হয়ে বলেছিলেন, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আইনজীবীরা অপেক্ষা করে আছেন। বার এখনও কিছু করেনি, তার মানে এই নয় যে বারকে ধরতব্যের মধ্যে আনা হবে না। তার উত্তরে প্রধান বিচারপতি বলেন, “অনুগ্রহ করে গলার স্বর চড়াবেন না। এসসিবিএ প্রেসিডেন্ট সুলভ আচরণ নয় এটা। আপনি বলছেন সুপ্রিম কোর্টকে বরাদ্দ করা জমি বারকে দিয়ে দিতে। আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি। আমি ১৭ তারিখ নিচ্ছি এবং বোর্ডে প্রথমে থাকবে না।”
প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, দুই সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং এনকে কাউর (Senior Lawyers Kapil Sibal and NK Kaul) বার অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে দেশের প্রধান বিচারপতির কাছে ক্ষমা (Apologize) চেয়ে নিয়েছেন।