ফিটনেস সার্টিফিকেট অথবা ঝুলন্ত সাঁকো চলাচলের উপযুক্ত এই শংসাপত্র ছাড়াই খুলে দেওয়া হয়েছিল গুজরাতের মোরবি ঝুলা! শতাব্দী প্রাচীন ব্রিটিশ আমলের এই সেতুটি রবিবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনা ঘটার মাত্র ৫ দিন আগেই জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু ফিটনেস সার্টিফিকেট কার বা কাদের অনুমতিতে এরকম কাজ করা হল! কেনই বা শয়ে শয়ে বাচ্চা, বৃদ্ধ, মহিলাদের জীবন নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলা হল?
কী রয়েছে এর নেপথ্যে? দীর্ঘ মেরামতিই যদি হয়ে থাকে, তাহলে কী করে ঘটন এমন ভয়াবহ বিপর্যয়। মেরামতি বা সংস্কারের কাজে গাফিলতি, দুর্নীতির অভিযোগ বিরোধীরা তুলতে শুরু করেছে। সরকারপক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়ে দায় সেরেছে। কিন্তু, যারা এই ‘গণহত্যা’র নেপথ্যচারী, তাদের কি আদৌ শাস্তি হবে? এরকম হাজারো প্রশ্ন উঠেছে মোরবি শহরে ঝুলন্ত সাঁকো দুর্ঘটনার পরে।
আরও পড়ুন: PM Narendra Modi: মৃত্যুপুরী গুজরাতে সর্দারের মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য মোদির, বাতিল করলেন রোড শো
সরকার এখন দায় ঝেড়ে ফেলতে বলছে, সাঁকোটি খুলে দেওয়া হলেও পুরসভার ফিটনেস সার্টিফিকেট নেওয়া হয়নি। এখানেই সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, সরকার বা পুরসভা জানল না, অথচ সাঁকোটি খুলে দেওয়ার দায়িত্ব তাহলে নিল কে বা কারা? জরাজীর্ণ সাঁকোটি মেরামতের দায়িত্ব পেয়েছিল একটি বেসরকারি সংস্থা। প্রায় ৭ মাস ধরে সংস্কারের কাজ হয়েছে। তাহলে কী মেরামত হয়েছে, প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ ও বিরোধীরা।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওরেভা নামে একটি কোম্পানি সেতুটির দেখভাল ও কাজ চালাত। এ বছরের মার্চে সংস্কারের জন্য সেতুটিতে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৬ অক্টোবর গুজরাতি নববর্ষের দিন এটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয় বলে জানান মোরবি পুরসভার মুখ্য আধিকারিক সন্দীপসিন জালা। তবে তিনি এও জানান, পুরসভা সেতু চালু করে দেওয়ার ব্যাপারে কোনও ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়নি।
জানা গিয়েছে, ১৯২২ সালে মোরবির শাসক স্যার ওয়াঘজি ঠাকোরের আমলে এই ঝুলা তৈরি হয়। দরবারগড়ের সঙ্গে রাজপ্রাসাদ নজরবাগের যোগাযোগ স্থাপনে এই সেতু তৈরি করিয়েছিলেন তিনি। ১.২৫ মিটার চওড়া এবং ২৩৩ মিটার দীর্ঘ এই সেতুতে রবিবার একসঙ্গে প্রায় সাড়ে ৫০০ লোক উঠে পড়েছিলেন।