গরু পাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) জামিন হল না অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal), প্রভাবশালী তত্ত্বের জেরে আগামী ১১ নভেম্বর পর্যন্ত জেলেই থাকতে হচ্ছে বীরভূমের তৃণমূল (TMC) জেলা সভাপতিকে। শনিবার দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর এই রায় শুনিয়েছেন আসানসোলের আদালত (Court)। এদিন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা আদালতকে বলেন, আর কতদিন আদালতে থাকতে হবে তৃণমূল নেতাকে কিংবা কতদিন সিবিআইয়ের তদন্ত (CBI Investigation) প্রক্রিয়া চলবে? তা শোনার পর বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, আর কতদিন সময় লাগবে তদন্ত শেষ করতে? কারণ, তদন্তে অনেক সময় নিচ্ছে সিবিআই। আদালত সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে তদন্ত শেষ হওয়ার সম্ভাব্য তারিখও জানতে চায়। তার উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, খুব শীঘ্রই পক্রিয়া শেষ হবে। তবে অনুব্রত যেহেতু প্রভাবশালী ব্যক্তি, তাই তিনি বাইরে থাকলে প্রভাব খাটিয়ে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাতে পারেন। এরপর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ১১ই নভেম্বর ধার্য করেন আইনজীবী। ততদিন পর্যন্ত বীরভূমের তৃণমূল নেতাকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। পরবর্তী শুনানির আদালতে ফের হাজির হতে হবে অনুব্রতকে।
আরও পড়ুন: Kaksa tmc: কাঁকসায় তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ, হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য
আদালতে অনুব্রতর আইনজীবীর অভিযোগ ছিল, তাঁর মক্কেলকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। অনুব্রতর বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত পাঁচটি চার্জশিট জমা পড়েছে। আইনজীবীর অভিযোগ, একের পর এক চার্জশিট এনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁর মক্কেলের জামিন আটকানোর চেষ্টা চলছে। সিবিআইয়ের বক্তব্য হল, অনুব্রত তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। জেলে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি চুপ করে থাকছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে অনুব্রতর আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল কিছুই জানে না। না জানলে তিনি কী বলবেন। আইনজীবীর যুক্তিতে উঠে আসে, দল বদলালে কিংবা রাজনীতি থেকে অবসর নিলে তবেই কী মিলবে জামিন? তবে আদালতে শেষ পর্যন্ত সিবিআইয়ের পক্ষেই রায় দেন এবং অনুব্রতর জেল হেফাজতের সময়সীমা ১১ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন।
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় গত ১১ অগাস্ট অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত চলছে। এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর তৃণমূল নেতার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। পুজোর ছুটিও জেল হেফাজতেই কেটেছে তাঁর। এর মধ্যে আদালতে সিবিআই একাধিক চার্জশিট জমা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে গরু পাচারের টাকা আত্মীয় এবং বাড়ির পরিচারকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (Bank Account) রেখে সাদা করতেন অনুব্রত। এমনকি, তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের ফোন ব্যবহার করেই সবকিছু সামলাতেন তৃণমূল নেতা।