সিমলা: চারিদিকে সাদা বরফের চাদর। তাপমাত্রা নেমেছে মাইনাস ৭ ডিগ্রি। মাটি থেকে ১৫ হাজার ২৬৫ ফুট উঁচু। কনকনে ঠাণ্ডায় আদিবাসী (tribal) পোশাক পড়ে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে ভোট দিয়েছেন হিমাচলপ্রদেশের স্পিতি (spiti) জেলায় ত্যাশিগ্যাংয়ের (tashigang) বাসিন্দারা। গণতন্ত্রের সেই উৎসব সফল হয়েছে, যখন জানা গেল এবছর হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ভোট পড়েছে। যে স্বপ্ন দেখতেন, ভারতের প্রথম ভোটার হিমাচলপ্রদেশের বাসিন্দা সদ্য প্রয়াত শ্যামশরণ নেগী (shyamsaran neggi)। তিনি প্রয়াণের তিন দিন আগেও পোস্টাল ব্যালটে এই বিধানসভার আগাম ভোট দিয়ে জানিয়েছিলেন, আরও বেশি করে মানুষ ভোট দিতে আসুক। গণতন্ত্রের জন্য এটাই তাঁর ইচ্ছা। নেগীর জন্মস্থান কিন্নাউর জেলাতেও ভোট পড়েছে রেকর্ড হারে। সব মিলিয়ে এবার হিমাচলপ্রদেশে (himachalpradesh) ৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
পাহাড়ের চূড়ায় থাকা তাশিগ্যাং থেকে চাস্কভাতোরি মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে ফুরফুরে মেজাজে ভোট দিয়েছেন। ভারতের নির্বাচন কমিশনার (election commission of india) রাজীব কুমার (rajib kumar) বলেন, ১০ হাজার ফুট উচ্চতার উপরে ১০০টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছিল। সেখানে ভোটের হার খুব ভালো। উচ্চতার সর্বোচ্চ শিখরেও মানুষ ভোট দেওয়াকে উপভোগ করেছে। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে শিরমাউর জেলায়। সেখানে ভোট পড়েছে ৭৯.৬২ শতাংশ।
সাধারণত, বেশি ভোট পড়লে ‘অ্যান্টি ইনকাম্বেন্সি’ অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট দেখা যায়। সেখানকার শাসক বিজেপি তাই এই ঘটনায় বেশ খানিকটা চাপে। আগামী ৮ ডিসেম্বর ফল প্রকাশ হলে সব পরিষ্কার হবে।
আরও পড়ুন: Dog Bite: কুকুরে কামড়ালে মালিকের জরিমানা ১০ হাজার! কোথাকার আইন জানুন
এর আগে ২০১৭ সালে হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছিল ৭৪.৬১ শতাংশ। যে ঘটনায় শাসক কংগ্রেসকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে মানুষ ক্ষমতায় এনেছিল বিজেপিকে। ২০০৩ সালে বিজেপি-এইচভিসি সরকার ভোটে হেরে যায়। সেবছর হিমাচলে ভোট পড়েছিল সর্বোচ্চ ৭৩ শতাংশ। এরপর এবার আবার ব্যাপক ভোট বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি (bjp) শিবিরের চিন্তা বেড়েছে। বিশেষ করে বিজেপি নেতা পিকে ধূমল ও তাঁর শিবির এই ভোটে সেভাবে প্রচার করেননি। এমনকী সুভাষ শর্মার মতো নেতাকে জেপি নাড্ডা (jp nadda) বুঝিয়েও প্রার্থী হতে রাজি করাতে পারেননি। বিজেপি বিদায়ী মন্ত্রীদের অন্য কেন্দ্রে ভোট দাঁড় করিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ফোন করে প্রার্থীকে নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ানো থেকে বিরত করতে পারেননি।
ওয়াকিবহালের মতে, শ্রীমাউরে ব্যাপক ভোট পড়ায় মনে করা হচ্ছে, সেখানে হাট্টি রাজনীতির সমর্থনে ভোট পড়েছে। তাদের এসটি মর্যাদার দাবি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তাঁরা। যাইহোক কংগ্রেস ও বিজেপি দুই শিবিরকে চিন্তায় রেখেছে ২৮টি কেন্দ্রে বিদ্রোহীদের প্রার্থী হওয়া।