নয়াদিল্লি: ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের (WFI) প্রেসিডেন্ট ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের (Brij Bhushan Sharan Singh) বিরুদ্ধে মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্তা নিয়ে তুমুল ডামাডোল চলছে। ব্রিজভূষণের পদত্যাগের দাবিতে দিল্লির যন্তরমন্তরে (Jantar Mantar) প্রতিবাদে শামিল কুস্তিগিররা। নীরজ চোপড়ার (Neeraj Chopra) মতো অন্য ক্রীড়ার কৃতীরাও এই আন্দোলন সমর্থন করছেন। কিন্তু পদত্যাগের নামই করছেন না ব্রিজভূষণ। উল্টে সোমবার কটু মন্তব্য করে এ নিয়ে বিতর্ক বাড়ালেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, তিনি কি ‘শিলাজিৎ’ (Shilajit) মেশানো রুটি খেয়েছিলেন নাকি যে এত মেয়ের যৌন হেনস্তা করবেন?
রবিবার ব্রিজভূষণ দাবি করেন, কংগ্রেস নেতা দীপেন্দ্র হুডা (Deependra Hooda) তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দেন তিনি। এই দাবির ২৪ ঘণ্টা পেরতে না পেরতেই বিশ্রী মন্তব্য করলেন তিনি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, আগে ওরা বলছিল, ১০০টি মেয়ের যৌন হেনস্তা করেছি। এরপর বলা শুরু করেছে ১০০০ মেয়েদের সঙ্গে এটা ঘটেছে। আমি কি শিলাজিৎ দিয়ে বানানো রুটি খেয়েছিলাম? যদি ওই ১০০০ জন যন্তরমন্তরে যায় আমি পদত্যাগ করব।
বিজেপি সাংসদের বয়স এখন ৬৬। এই বয়সে যৌন হেনস্তা করতে হল যৌন ক্ষমতা বর্ধক ওষুধ ‘শিলাজিৎ’ সেবন করতে হয়, ইঙ্গিতটা ছিল সেদিকেই। বয়সের দোহাই দিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইছেন কুস্তি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: Karnataka Assembly | জয়নগর কেন্দ্র কি কংগ্রেসের সৌম্যা দখলে রাখতে পারবেন?
প্রসঙ্গত, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেকদিন আগেই তুলেছিলেন কুস্তিগিররা। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) দায়ের করা হচ্ছিল না। গত এক সপ্তাহে আন্দোলন তীব্রতা পায় এমন নড়েচড়ে বসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) পুলিশ। শুক্রবার ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগে দুটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। প্রথম এফআইআরটি এক নাবালিকা কুস্তিগিরের অভিযোগের ভিত্তিতে। এই অভিযোগে মামলা হয়েছে পকসো (POCSO) আইনে। দ্বিতীয়টি এক মহিলার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে। দিল্লি পুলিশের প্রতিনিধি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা (Tushar Mehta) সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (Chief Justice DY Chandrachur) এবং বিচারপতি পি এস নরসিমার (Justice PS Narsimha) বেঞ্চে জানিয়েছিলেন, মামলা করা হবে। কিন্তু তারও বেশ কয়েক ঘণ্টা পর এফআইআর করা হয়।
এদিকে এই আন্দোলনের ফলে দেশে কুস্তি খেলা থমকে আছে বলে জানিয়েছিলেন ব্রিজভূষণ। তিনি বলেন, আমাকে ফাঁসি দাও কিন্তু কুস্তি থামিও না। শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা কোরো না। ক্যাডেট ন্যাশনালের খেলা শুরু হতে দাও, মহারাষ্ট্র, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ু, যে কেউ আয়োজন করুক। কিন্তু খেলা থামিও না। বিজেপি সাংসদের এই বার্তা যে কংগ্রেসের দিকে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।