নয়াদিল্লি: ভারতের বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া (Air India) এবং অন্যান্য দেশের বিভিন্ন বিমান পরিবহন সংস্থা (Other Foreign Carriers), যারা আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবার (International Flight Service) ক্ষেত্রে রাশিয়ার আকাশসীমা (Russian Airspace) ব্যবহার করে, তাদের যেন আমেরিকান এয়ারপোর্ট (Airports in USA) যাতে নামতে না দেওয়া হয়, সেজন্য মার্কিন প্রশাসনকে (US Administration) বোঝানোর চেষ্টা করছে সেদেশের বিমান পরিবহন সংস্থারা (US Carriers)। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, মার্কিন বিমান সংস্থাদের বক্তব্য, রাশিয়ার আকাশসীমা ব্যবহার করে উড়ান পরিষেবা দেওয়ার কারণে ভারতীয় (Indian), চীনা (Chinese) এবং এমিরেটস (Emirates), এতিহাদ এয়ারওয়েজ (Etihad Airways) ও কাতার এয়ারওয়েজ (Qatar Airways) মতো উপসাগরীয় বিমান সংস্থাগুলির (Gulf Carriers) কারণে ব্যবসায়িক ক্ষতি (Business Loss) হচ্ছে তাদের। ক্ষতির কারণ হলো, সস্তা টিকিট (Cheap Ticket) এবং তুলনায় কম সময়ে গন্তব্যস্থলে যাত্রীদের পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে (Less Time)। কিন্তু মার্কিন প্রশাসন যেহেতু আমেরিকার বিমান সংস্থাগুলিকে রাশিয়ার আকাশসীমা ব্যবহার করতে না দেওয়া হয়েছে, তাই তাদেরকে ঘুরপথে (Circuitous Route) যেতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে। তার ফলে উড়ানের সময় বেড়ে যাচ্ছে এবং যাতায়াতে ভাড়াও বাড়ছে।
আরও পড়ুন: Abudhabi SeaWorld: আবুধাবিতে সমুদ্রের কৃত্রিম তলদেশ দর্শকদের প্রতীক্ষায়
এয়ার ইন্ডিয়ার এমডি ও সিইও ক্যাম্পবেল উইলসন (Campbell Wilson, MD and CEO of Air India) এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের সচিব রাজীব বনশল (Rajiv Bansal, Secretary of Ministry of Civil Aviation) বলেছেন, কোনও দেশে অন্য কোনও দেশকে বলতে পারে না, কে কোন পথ ব্যবহার করবে এবং ব্যবহার করবে না। এটা ঠিক নয়। খবরে প্রকাশ, সিএপিএ ইন্ডিয়া অ্যাভিয়েশন সামিট ২০২৩ (CAPA India Aviation Summit 2023)-এর ফাঁকে তাঁর বক্তব্য, “মার্কিন সিনেটররা (US Senators) সেদেশের সরকারকে এই বিষয়টাই বোঝাতে চাইছে। তবে আমরা মার্কিন সররকারের (US Government) পক্ষ থেকে এখনও কোনও খবর পাইনি। যদি সংশ্লিষ্ট দেশেরা বলতে শুরু করে কে কোন বিমান পথ ধরবে, তাহলে সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক অসামরিক উড়ান ব্যবস্থা (International Civil Aviation Order) ভেঙে পড়বে।”
যদিও বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, এয়ার ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই পথে নাও হাঁটতে পারে। আর তার কারণ হলো, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। পাশাপাশি ভারত শিকানো কনভেশনে স্বাক্ষরকারী (Signatory to the Chicago Convention)। ভারত থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সপ্তাহে এয়ার ইন্ডিয়ার ৪০টি ফ্লাইট যায়।
ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গ্যানাইজেশন (International Civil Aviation Organisation – ICAO) ঠিক করে বিমান পথ বা এয়ার রুট (Air Routes)। এই সংস্থা ১৯৪৪ সালে শিকাগো কনভেশনে গঠন করা হয়েছিল।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনের (Ukraine) বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসন (Russian invasion) শুরু করেছে রাশিয়া। তারপর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United States of America), ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য (United Kingdom), কানাডা (Canada) এবং ইউরোপে (Europe) রাশিয়ার বিমানকে সংশ্লিষ্ট দেশ ও মহাদেশের আকাশসীমায় প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
সিএপিও ইন্ডিয়া সূত্রে বলা হয়েছে, ভারত এই নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নয়। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া কিংবা রাশিয়া ও ইউরোপের ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা (Geopolitical Issue)। যার কোনও প্রভাব (Impact) নেই এবং সম্ভাব্য প্রস্তাবও (Feasible Proposition) নেই।