ভোটের সময় প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, ভোট ফুরোলেই তার আর দেখা মেলে না। ভোটের পর ভোট চলে যায় এই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে রেহাই মেলে না ভোটারদের। এর জন্যই জাতীয় নির্বাচন কমিশন চেয়েছিল আদর্শ আচরণ বিধির সংশোধন ঘটাতে। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব, যে দল নানা প্রতিশ্রুতি দেবে তা পূরণ করার জন্য আর্থিক সংস্থান কী করে হবে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে হবে রাজনৈতিকদলগুলিকে। কমিশন এর জন্য সব দলকে চিঠিও দেয়। দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিল, এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার কোনও এক্তিয়ার তাদের নেই।
কংগ্রেসের প্রবীণ সাংসদ জয়রাম রমেশ নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে লিখেছেন, আবহমানকাল ধরে নির্বাচনী ইস্তাহারে রাজনৈতিক দলগুলির নানা্ প্রতিশ্রুতি দেওয়ার চল রয়েছে। এটা গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থারই একটি অঙ্গ। রাজনৈতিকদলগুলিকে এর থেকে বিরত রাখা কিংবা বিরত থাকতে বলার কোনও অধিকার এবং এক্তিয়ার কমিশনের নেই। কংগ্রেস নেতা চিঠিতে আরও লিখেছেন, প্রতিটা রাজনৈতিক দলের ইস্তাহারে তাদের নীতি ও আদর্শের প্রতিফলন থাকে। ভারতীয় রাজনীতিতে এই দেওয়া নেওয়ার বিষয়টি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ারই অঙ্গ। নির্বাচন কমিশনের এই বাড়তি উদ্যোগের কোনও প্রয়োজন নেই বলেই মনে করে কংগ্রেস। প্রতিটি দলই ক্ষমতায় এলে কী করবে তার রূপরেখা এবং বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার চেষ্টা করে তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে। জয়রামের মতে, এতে অন্যায় কিছু নেই।
আরও পড়ুন Narendra Modi: কবে মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেেন সুনক, জেনে নিন
বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তুলছে, ক্ষমতায় আসার আগে তো বিজেপি কত প্রতিশ্রুতি দেয়। তারা কী ক্ষমতায় এসে সেসব প্রতিশ্রুতি পালন করেছে? এই প্রসঙ্গেই বিরোধী নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির কথা। বিজেপি যেমন বলেছিল, ক্ষমতায় এলে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা ঢুকে যাবে। প্রতি বছর দেশে ২ কোটি বেকারের চাকরি হবে। কিন্তু, এগুলির কোনওটায় বাস্তবের মুখ দেখেনি।
নির্বাচন কমিশন ইস্তাহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনের টাকা কোথা থেকে আসবে, সেই টাকা পাওয়ার উৎস এবং উপায় কী হবে তাও জানতে চেয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে। এই কারণেই কমিশন নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে।