কলকাতা: এবার চাকরি বাতিলের তালিকায় প্রাক্তন বিধায়ক ও বর্তমান বিজেপি (BJP) নেতার মেয়ের নাম। বৃহস্পতিবার গ্রুপ সি (Group C) নিয়োগ বাতিলের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ৷ তাতে নাম রয়েছে বাগদার একাধিক ব্যক্তির ৷ সেই তালিকায় বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা দুলাল বরের মেয়ে বৈশাখী বরের নাম থাকায় তা নিয়ে তৃণমূল (TMC) প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে ৷ তৃণমূল নেতা সঞ্জিত সর্দার বলেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে দুলাল বর মিডলম্যান হিসেবে কাজ করেছেন। ধৃত চন্দন মণ্ডলের (Chandan Mondal) সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি অনেককে চাকরি দিয়েছেন। নিজের মেয়েকেও যে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন, তা আজ প্রমাণিত হল। তিনি আরও বলেন, চন্দন সিপিএম করতেন। আর দুলাল বর ছিলেন কংগ্রেস সিপিএম জোটের বিধায়ক ৷ দুলালকে সিবিআই এবং ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করলে কংগ্রেস ও সিপিএমের অনেক নেতার নাম উঠে আসবে ৷
প্রসঙ্গত, যাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাঁদের সবারই যে নম্বর বাড়ানো হয়েছে, এমনটা নয়। অনেকের ক্ষেত্রে নম্বর কমানোও হয়েছে। ওএমআর শিটে (OMR Sheet)বেশি নম্বর থাকলেও সার্ভারে কম নম্বর দেওয়া হয়েছে। এই নম্বর কারচুপির বিষয়টি স্কুল সার্ভিস কমিশনই আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল। সেই রিপোর্ট দেখে অবাক হয়ে যান হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। এরপরই তিনি তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সিবিআই ও এসএসসি এই ওএমআর কারচুপি সংক্রান্ত রিপোর্ট দিয়েছিল আদালতে। সেখানে গাজিয়াবাদ থেকে ৩ হাজার ৪৭৮ টি ওএমআর উদ্ধার হয়। এর মধ্যে ৩০০ টি ওএমআর বিকৃত করা হয়নি বলে জানানো হয়। বাকি ওএমআর ৯ মার্চ প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো বৃহস্পতিবার তালিকা প্রকাশ হয়।
আরও পড়ুন : Justice Abhijit Ganguly: গ্রুপ সির ৫৭ কর্মীর ভবিষ্যত আজই চূড়ান্ত হবে আদালতে
বাগদার বাসিন্দা এই চন্দন মণ্ডলের নাম উঠে আসে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাসের মুখে। মাস কয়েক আগে নিয়োগ দুর্নীতির ইস্যুতে উপেন বিশ্বাস একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল চন্দনের কথা। তিনি অবশ্য চন্দনের নাম নেননি। উপেন বলেছিলেন, সৎ রঞ্জন বলে বাগদায় একজন রয়েছে। সে টাকার বিনিময়ে অনেককে চাকরি দিয়েছে। তবে চাকরি দিতে না পারলে সে টাকা ফেরতও দিয়ে দিত। তার জন্যই উপেন বিশ্বাস তাঁকে সৎ রঞ্জন বলেছিলেন। পরবর্তীকালে এই চন্দনকে নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়। সিবিআই চন্দনের বাড়িতে তল্লাশিও চালায়। শেষ পর্যন্ত সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করে। চন্দনের অভিযোগ, উপেন বিশ্বাসের চক্রান্তেই তাকে গ্রেফতার হতে হয়েছে। এর আগে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে চন্দন-উপেন মুখোমুখি দেখা হয়েছিল। বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে চন্দন বলেছিল, উপেন বিশ্বাসকে সে চেনে না।