কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বেঁচে থাকাকালীনও ‘মাঙ্কিগেট’ বিতর্ক পিছু ছাড়েনি৷ অজি তারকা অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের মৃত্যুর পরেও ঘুরে ফিরে আসছে বিতর্কটি৷ সেই ‘মাঙ্কিগেট’ বিতর্কের অন্যতম সঙ্গী ভারতীয় ক্রিকেট তারকা হরভজন সিং প্রাক্তন অস্ট্রেলিয় ক্রিকেটারের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করলেন৷ টুইটে লিখলেন, ‘খুব তাড়াতাড়ি চলে গেল৷’
মাত্র ৪৬ বছর বয়সে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন প্রাক্তন অজি তারকা অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস৷ শনিবার রাতে কুইন্সল্যান্ডে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি৷ গাড়ি থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়েন৷ আঘাত গুরুতর হওয়ার কারণে অজি তারকার মৃত্যু হয়৷ তাঁর অকস্মাৎ মৃত্যুতে শোকাহত ক্রিকেট দুনিয়া৷ সতীর্থ থেকে শুরু করে বিপক্ষ দেশের ক্রিকেটাররাও অ্যান্ড্রুর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন৷ রবিবার সকালে টুইট করেন হরভজনও৷ লেখেন, ‘অ্যান্ড্রুর অকস্মাৎ মৃত্যুর খবরে চমকে গিয়েছি৷ বড্ড তাড়াতাড়ি চলে গেল৷ ওঁর পরিবার ও বন্ধুদের সমবেদনা জানাই৷ আত্মার শান্তি কামনা করি৷’
Shocked to hear about the sudden demise of Andrew Symonds. Gone too soon. Heartfelt condolences to the family and friends. Prayers for the departed soul 🙏#RIPSymonds
— Harbhajan Turbanator (@harbhajan_singh) May 15, 2022
২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে অ্যান্ড্রুর সঙ্গে বিতর্কে জড়ান হরভজন৷ যা ক্রিকেট ইতিহাসে ‘মাঙ্কিগেট বিতর্ক’ নামে পরিচিতি পায়৷ সিডনি টেস্ট চলাকালীন দুই দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়৷ সেই সময় হরভজন হিন্দিতে একটি মন্তব্য করেন৷ যা শুনে অ্যান্ডুর মনে হয়, হরভজন তাঁকে মাঙ্কি বলেছেন৷ তিনি ভারতীয় স্পিনারের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষী ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন৷ শাস্তিস্বরূপ হরভজনকে তিন ম্যাচের জন্য নির্বাসন করে আইসিসি৷ কিন্তু হরভজনের পাশে দাঁড়ান তাঁর সতীর্থরা৷ তাঁরা বারবার দাবি করেন, ভাজ্জি ওই মন্তব্য করেনি৷ কিন্তু আইসিসি তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় বিসিসিআই সিরিজ বাতিল করে ক্রিকেটারদের দেশে ফিরিয়ে আনার হুঁশিয়ারি দেয়৷ তখন ফের শুনানি হয়৷ হরভজনের পাশে দাঁড়ান সচিন তেন্ডুলকর৷ শুনানির পর প্রমাণিত হয় হরভজন কোনও বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেননি৷ তাঁর উপর থেকে সেই শাস্তি তুলে নেওয়া হয়৷
সেই বিতর্ক মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে অ্যান্ড্রুকে৷ একাধিকবার সাক্ষাৎকারে সেকথা জানিয়েছিলেন প্রাক্তন অজি তারকা৷ তবে পরবর্তী সময়ে আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে একসঙ্গে খেলেছেন তাঁরা৷ তারপরই অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যায় দু’জনের সম্পর্ক৷ হরভজন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘প্রথম যখন শুনেছিলাম তখন মনে হয়েছিল কেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ওকে দলে নিল? আমরা একসঙ্গে কী করে খেলব? পরে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ড্রেসিং রুমে অ্যান্ড্রুর সঙ্গে দেখা হয়৷ তখন ও সম্পূর্ণ আলাদা মানুষ৷ আমি ভেবেছিলাম, আমার উপর খুব রেগে থাকবে৷ হয়তো এখনও আমার প্রতি ভুল ধারনা দূর হয়নি৷ কিন্তু চণ্ডীগড়ে একটি ম্যাচে জয়ের পর এক বন্ধুর বাড়িতে আমাকে প্রথমবার জড়িয়ে ধরেছিল৷ তারপর আমরা একে অপরের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিই৷’