খার্তুম: উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশে সুদানের (Sudan) সাম্প্রতিক অবস্থা ও পরিস্থিতি এখন ভীষণ খারাপ। সামরিক বাহিনী (Military) ও আধাসামরিক বাহিনী (Paramilitary Force) একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ভয়ে বিদেশি নাগরিকরা (Foreign Citizens) সুদান ছাড়তে চাইছেন। সেই দলে রয়েছেন ভারতীয় নাগরিকরাও (Indian Citizens)। সুদানের রাজধানী খার্তুমে (Khartoum, Sudanese Capital) প্রচণ্ড ভিড়। লক্ষ্য যে কোনওভাবে বিমান ধরে দেশে ফেরত আসা। কিন্তু, সুদানের খার্তুমে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস (Indian Embassy in Sudan) পরামর্শ দিচ্ছে, এখনই রাস্তায় না বেরিয়ে পড়ে ঘরের ভিতর থাকতে।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) সুদানের সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর আচমকাই লড়াই (Fight) শুরু হয়েছে। একে অপরের ঘাঁটি (Base) লক্ষ করে উভয়েই হামলা চালিয়েছে। তার পরপরই খার্তুমেই বিস্ফোরণের (Explosions) ঘটনা ঘটেছে। এরপর ভারতীয় নাগরিকদের উদ্দেশে টুইটারে (Twitter) বার্তা দিয়েছে সুদানের ভারতীয় দূতাবাস।
আরও পড়ুন: Sherlyn Chopra | Molestation Case | শ্লীলতাহানির অভিযোগে শার্লিন চোপড়ার মামলা
ভারতীয় দূতাবাসের টুইট – “গুলি চালনা ঘটনা ও সংঘর্ষের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে সমস্ত ভারতীয়দের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার, ঘরের ভিতরে থাকার এবং অবিলম্বে বাইরে বেরনো বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
NOTICE TO ALL INDIANS
IN VIEW OF REPORTED FIRINGS AND CLASHES, ALL INDIANS ARE ADVISED TO TAKE UTMOST PRECAUTIONS, STAY INDOORS AND STOP VENTURING OUTSIDE WITH IMMEDIATE EFFECT. PLEASE ALSO STAY CALM AND WAIT FOR UPDATES.
— India in Sudan (@EoI_Khartoum) April 15, 2023
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, সুদানের আধাসামরিক বাহিনীর দাবি, তারা প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস (Presidential Palace) এবং খার্তুম এয়ারপোর্টের (Khartoum Airport) নিয়ন্ত্রণ দখল করে নিয়েছে। তারা এটাও দাবি করেছে, সোবাতে অবস্থিত ঘাঁটিগুলি (Bases in Soba) থেকে তারা আক্রমণকারীদের হটিয়ে দিয়েছে এবং মেরোওয়ে (Merowe) বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ হাতে তুলে নিয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য, সম্প্রতি সুদানের সেনাবাহিনী সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, অবস্থা এখন খুব থারাপ, বিপজ্জনক মোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে দেশ। সুদানের সেনাবাহিনী তরফে এই সতর্কবার্তা আসার কয়েকদিনের মধ্যেই সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের (Attack and Clash) ঘটনা ঘটল। সাধারণ মানুষ আতঙ্কে, বিশেষজ্ঞ মহলের ধারনা নেই, কোন পথে দেশের রাজনৈতিক ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এগোচ্ছে।
কী কারণে দ্বন্দ্ব?
সুদানের সামরিক বাহিনীর প্রধান আবদেল ফতাহ অল-বুরহান (Military Head Abdel Fattah al-Burhan) এবং প্যারামিলিটারি কমান্ডার মহম্মদ হামদান দাগলো (Paramilitary Commander Mohamed Hamdan Daglo)-র মধ্যে বিরোধ চমর পর্যায়ে পৌঁছেছে। দ্বন্দের (Conflict) কারণ হলো, নিয়মিত সেনাবাহিনীতে (Regular Army) আধাসামরিক বাহিনী ব়্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (Rapid Support Forces – RSF) পরিকল্পিত একীকরণের (Planned Integration) বিষয়। সুদানের কর্মরত একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার সাংবাদিক এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া খবর অনুযায়ী, দক্ষিণ খার্তুমের আরএসএফ ঘাঁটিতে তারা সংঘর্ষ, তীব্র বিস্ফোরণ এবং গুলি চালানোর আওয়াজ পেয়েছেন। সেনা প্রধান আবদেল ফতাহ আল-বুরহানের বাসভবনের কাছেও গোলাগুলির শব্দ শোনা গিয়েছে। সেনা-সামরিক বাহিনীর গোলাগুলির লড়াইয়ে থেকে প্রাণ বাঁচাতে সাধারণ নাগরিকদের রাস্তায় ছুটেতেও দেখা দিয়েছে আশ্রয়ের জন্য। সুদানে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হওয়ার জন্য একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ (Blame Game) করছে দুই পক্ষ। আধাসামিক বাহিনী বলছে, শনিবার আচমকাই সেনা হামলা চালিয়েছে খার্তুমের আরএসএফ ঘাঁটিতে। অন্যদিকে সেনার বক্তব্য, আরএসএফ রাজধানী খার্তুম ও দেশের অন্যত্র সেনা ঘাঁটিতে আগে হামলা চালিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের অক্টোবরে সেনা প্রধান বুরহানের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানের (Coup) মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। দেশের আধাসামরিক বাহিনীও তাতে সামিল ছিল। কিন্তু তারপর থেকে দেশে এখনও গণতন্ত্রের শাসন ফেরেনি। আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে এবিষয়ে সমাধান সূত্রে আসতে পারেনি সেনা। দুই পক্ষই একে অপরের বিরোধিতা করে যাচ্ছে।