ইরানে হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের প্রভাব পড়তে চলেছে ভারতের রফতানি ব্যবসায়। এদেশের চা আর বাসমতী চালের সব থেকে বড় আমদানিকারী দেশ হচ্ছে ইরান। কিন্তু হিজাব-বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর ওই দেশ থেকে আর কোনও নতুন আমদানির বরাত আসছে না। বৈদেশিক বানিজ্য সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের শহরগুলিতে ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়া হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভের ফলে সে দেশের চা আর বাসমতী চালের আমদানিকারী ব্যবসায়ীরা সমস্ত রকম বরাত দেওয়া বন্ধ করে দিলেও পরিস্থিতির উপর নজরদারি রেখেছেন।
করোনার কারণে প্রায় দুবছর বন্ধ থাকার পর সদ্য দেশের রফতানি ব্যবসা একটু ভাল আকার নিচ্ছিল। কিন্তু ইরানের আন্দোলন সে পরিস্থিতিকে খানিকটা হলেও পিছনে ঠেলে দিল, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সব থেকে উদ্বেগের বিষয়টি হচ্ছে, ইরানে হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভ ক্রমেই আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। আবার সরকারের তরফেও আন্দোলন ঠেকানোর জন্য নানা রকম দমনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও লক্ষণই আপাতত চোখে পড়ছে না।
চা রফতানিকারী সংস্থার কর্তা মোহিত আগরওয়াল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ব্যবসা বেশ ভালই চলছিল। কিন্ত ইরানের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির জেরে পশ্চিম- এশীয় দেশগুলিতে চায়ের রফতানি ব্যবসা বেশ ধাক্কা খেয়েছে। গত দশদিনে আর কোনও নতুন আমদানির বরাত ইরান থেকে আসছে না। আশা করা হচ্ছে আগামীদিনে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। অবশ্য অল ইন্ডিয়া রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বিনোদ কল-এর দাবি, ইরানে সাম্প্রতিক সময়ে যে বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে তার জন্য এখনও পর্যন্ত বাসমতী চাল রফতানিতে খুব বড় মাপের প্রভাব পড়েনি। কিন্তু ওই বিক্ষোভ আর কিছুদিন চললে ব্যবসা ধাক্কা খাবে।
করোনার জেরে লকডাউন শুরু হওয়ার আগে ২০১৯ সালে ইরানে ৫৩ লাখ কেজি চা রফতানি করেছিলেন দেশের চা ব্যবসায়ীরা। ২০২০ সালে সে পরিমান অনেকটাই কমে হয় ২৯ লাখ কেজি। আর ২০২১ সালে আরও খনিকটা ধাক্কা খায় ইরানে চা রফতানি। সে বছর রফতানির পরিমাণ কমে হয় ২১ লাখ কেজি। আর এই আবহে চলতি বছরে খানিকটা আশাপ্রদ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভ সেই পরিস্থিতিকে খানিকটা হলেও বিপরীতমুখী করে তুলেছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞমহল।