জহরকে রাজ্যসভা সদস্যদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে সরিয়ে দিল তৃণমূল

প্রাক্তন আমলা জহর সরকারকে রাজ্যসভা সাংসদদের হোয়াট্স অ্যাপ গ্রুপ থেকে সরিয়ে দিল তৃণমূল। শনিবারই এই সাংসদকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দলের অপর রাজ্যসভা সদস্য শান্তনু সেন তা স্বীকারও করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, এরপর কী করবেন জহর সরকার। তিনি কী সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন নাকি তাঁকে সদস্যপদ ছাড়তে বলবে তৃণমূল, তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা।
দিন কয়েক আগেই এই প্রবীণ সাংসদ সংবাদমাধ্যমের সামনে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, এদের নিয়ে টিভির পর্দায় যা দেখছি, তা ভাবা যায় না। এসব আগে কখনও দেখিনি। এদের মতো লোককে পচা অংশ থেকে না সরালে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে লড়াই করা খুব মুশকিল। এসব দেখে বাড়ির লোক, বন্ধুবান্ধব বলছে, এখনই রাজনীতি ছেড়ে দাও। কেউ আবার ফোন করে বলছে, এখনও এই দলে আছিস? কত পেয়েছিস?
সংবাদমাধ্যমে জহরের এসব বক্তব্য প্রচার হতেই মুখ খোলেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, উনি রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ছেন না কেন, কেন তা আঁকড়ে রয়েছেন? উনি ছেড়ে দিলে আমরা উপনির্বাচনে অন্য কাউকে জিতিয়ে আনব। সৌগত আরও বলেন, দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির ওঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। মুখ খোলেন দলের পরিষদীয় সচিব তাপস রায়ও। তৃণমূলের অন্দরে কথা ওঠে, পার্থ, অনুব্রত নিয়ে যখন দল বিড়ম্বনার মধ্যে রয়েছে, তখন এসব কথা বলার জন্য এই সময়ই বাছলেন কেন তিনি। সৌগত বলেন, ২১ জুলাই দিল্লিতে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সাংসদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেও তিনি কোনও কথা বলেননি।
জহর জানান, তিনি আত্মসম্মান বিক্রি করে দলে থাকবেন না। নেত্রী যদি চান, তবে তিনি দলের সাংসদ পদ ছেড়ে দেবেন। প্রসঙ্গত, মমতার অনুরোধেই জহর সরকার তৃণমূলের হয়ে রাজ্যসভার সদস্যপদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন। মমতার প্রস্তাব পাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন।
গত কদিনে অবশ্য এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি মমতা এবং দলের দ্বিতীয় ব্যক্তি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে দলীয় সূত্রের খবর, নেতৃত্ব চাইছিলেন, জহর সরকার ইস্তফা দিন। নেত্রীর নির্দেশে দলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দু শেখর রায় কথা বলেন জহর সরকারের সঙ্গে। সুখেন্দু তাঁকে দলের মনোভাবের কথা জানিয়ে দেন। তার পরেই শনিবার জহর সরকারকে রাজ্যসভা সাংসদদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে অপসারিত করে তৃণমূল বুঝিয়ে দিল, দল তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদের পথেই হাঁটছে। তারই পদক্ষেপ এই অপসারণ।