কলকাতা: সিবিআইয়ের (CBI) স্ক্যানারে এবার ধৃত বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jibankrishna Saha) স্ত্রী ও শ্যালকের চাকরি। তাঁর স্ত্রী টগরি সাহা আন্দি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা। তাঁর শ্যালক রঘুনাথগঞ্জ পিয়ারাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁরা নিজেরা চাকরি পেয়েছেন না কি জীবনকৃষ্ণ সাহা প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের চাকরি করে দিয়েছেন সেটা খতিয়ে দেখছে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে (Recruitment Scam) সিবিআই গ্রেফতার করেছে জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। নাটকীয়ভাবে তাঁর ফেলে দেওয়া মোবাইল খুঁজে পেতে পুকুরের জল তুলতে মোটর আনানোর ব্যবস্থা করে সিবিআই।
সিবিআই স্ক্যানারে জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha) ও তাঁর স্ত্রী টগরির সম্পত্তি। যা দেখে রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছে তদন্তকারীদের। রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের (Account) হদিশ মিলেছে। এগুলির মধ্যে বিধায়কের নামে চারটি ও তাঁর স্ত্রীর নামে তিনটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এই অ্যাকাউন্টগুলিতে লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় নথি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই (CBI)। সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩০০ কোটি ছাড়াতে পারে। মঙ্গলবার জীবনের স্ত্রীকে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়। তাঁকে বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই অফিসাররা। বিকেল ৪টে নাগাদ টগরি সিবিআই দফতর ছেড়ে বেরিয়ে যান।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, বীরভূমের বিভিন্ন ব্যাঙ্কেও জীবনকৃষ্ণের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বীরভূমের সাঁইথিয়া, তালতোড়, তাতারপুর, বাঁধগোড়া ছাড়াও মুর্শিদাবাদের আন্দিতে বিধায়ক ও তাঁর স্ত্রীর নামে একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৮-১০ কোটি টাকা। এছাড়া, জীবনকৃষ্ণের আর কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা সম্পত্তি রয়েছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে সিবিআই। বীরভূমের চার-পাঁচটি জায়গায় স্ত্রী ও জীবনের নামে জমি-বাড়ি রয়েছে। অন্য কোনও আত্মীয়র নামে আরও কোনও সম্পত্তি আছে কিনা, তার খোঁজখবর শুরু করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ চলছে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee| Suvendu Adhikari | নাম না করে শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ মমতার
সূত্রের দাবি, জীবনের হিসেববহির্ভূত বহু সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মিলেছে একাধিক এজেন্টের নাম, মোবাইল নম্বর সহ একাধিক তথ্য। তাঁদের সঙ্গে জীবনের কীভাবে তথ্য ও টাকা-পয়সা লেনদেন হত, আদৌ তা হত কি না, সেই সংক্রান্ত তথ্যও জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha) অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। অনুব্রতের গ্রেফতারের পর থেকেই সিবিআই স্ক্যানারে ছিলেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ। বীরভূমে জীবনের একাধিক সম্পত্তির হদিশও মিলেছে। তদন্তকারীরা গরু পাচারে জীবনের ভূমিকা খতিয়ে দেখছেন।