কলকাতা: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (West Bengal Governor CV Ananda Bose) জরুরি তলব করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে (Kolkata CP Vinit Goyel)। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Rajasekhar Mantha) বিরুদ্ধে নজিরবিহীন বিক্ষোভের জেরে এই জরুরি তলব বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে রাজ্যপাল থাকাকালীন বর্তমান উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় কথায় কথায় রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের ডেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির খোঁজ নিতেন। যা নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে তাঁর বিরোধ সর্বজনবিদিত ছিল। এবার সিভি আনন্দ বোসও রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথমবার কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে রাজভবনে ডেকে পাঠালেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয়। তাঁর এজলাস বয়কট করার ডাক দেন একদল আইনজীবী। তাঁরা এজলাসের দরজা বাইরে থেকে আটকে দেন। আইনজীবীদের এজলাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। বাম, কংগ্রেস, বিজেপি সমর্থক আইনজীবীদের সঙ্গে ওই বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের ধস্তাধস্তিও হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে যায় যে বিচারপতি মান্থা এজলাস ছেড়ে চলে যান। তাঁর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পোস্টার পড়ে। রবিবার রাতে একই পোস্টার পড়ে বিচারপতি মান্থার যোধপুর পার্কের বাড়ির সামনেও।
আরও পড়ুন: Abhijit Ganguly: কোন দুর্বৃত্তদের এত সাহস, হাইকোর্টে বিক্ষোভ নিয়ে বিস্ফোরক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
বিরোধীদের অভিযোগ, এটা শাসকদলের কাজ যদিও তৃণমূলের রাজ্য নেতারা দাবি করেন, এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু পোস্টারের বিষয়বস্তুর সঙ্গে তৃণমূলের বহুচর্চিত বক্তব্যের মিল রয়েছে। সোমবার বিক্ষোভরত আইনজীবীদের বক্তব্য ছিল, বিচারপতি মান্থা একের পর এক রায় দিয়ে্ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সমানে রায় দিয়ে যাচ্ছেন। একই অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে করে চলেছেন তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। হাইকোর্টের পোস্টারেও সেই একই কথা লেখা হয়েছে।
এরপর মঙ্গলবারও কলকাতা হাইকোর্টে কার্যত অচলাবস্থা চলে। বিরোধী মতাবলম্বী আইনজীবীরা দাবি করেন, আদালতকে অভিযুক্ত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করতে হবে। এদিন বিচারপতি মান্থা ওই আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করে মামলা প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে পাঠিয়ে দেন।