নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) তাঁর ৭২-তম জন্মদিনকে (Birthday) ‘ঐতিহাসিক’ করে রাখতে শনিবার মধ্যপ্রদেশের অভয়ারণ্যে আফ্রিকান চিতা (African Cheetah) ছাড়লেও রাজনৈতিক জঙ্গলে তা নিয়ে হুঙ্কার-পালটা হুঙ্কার শুরু হয়ে গিয়েছে। ‘প্রজেক্ট চিতা’র কৃতিত্ব নিয়ে কংগ্রেস-বিজেপির মধ্যে আঁচড়া-আচড়ি চলছে। এমনিতেই ভারতে বিলুপ্ত পৃথিবীর দ্রুতগামী পশুর নিরাপদ বাসস্থান হিসেবে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) কুনো জঙ্গল কতটা নিরাপদ তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা। কারণ, কুনো জাতীয় উদ্যানে রয়েছে হায়নার দল, চিতাবাঘ, বন্য কুকুর। এই শত্রুদের ঘেরাটোপে চিতার নিজস্ব শিকার বা খাদ্যেরও অভাব দেখা দেবে। ফলে, এই বিশাল মাপের প্রকল্প শেষমেশ জলে যাবে না তো! প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের।
মোদির হাতে চিতার খাঁচামুক্তির আগেই কংগ্রেস নেতা, সাংসদ জয়রাম রমেশ টুইটে দাবি করেন, ‘প্রজেক্ট চিতা’ ২০০৮-২০০৯ সালে মনমোহন সিংয়ের সরকারের পরিকল্পনা। জয়রামের দাবির জবাবে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেন, তখনকার পরিকল্পনায় গলদ ছিল, তাই সুপ্রিম কোর্ট তাতে স্থগিতাদেশ দেয়। ২০১২ সালে প্রজেক্ট চিতার পরিকল্পনাকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়। সেই বছরই ৮ মে এই পরিকল্পনার উপর স্থগিতাদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৭ সালে ফের সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয় এবং ২০২০ সালে আদালত মহড়া হিসেবে প্রজেক্টে সবুজ সংকেত দেয়।
আরও পড়ুন: টিটাগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার চার, ধৃতদের তিনজন স্কুলেরই প্রাক্তনী
এদেশে আনুমানিক ৭০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায় এশীয় চিতা। তাই কংগ্রেস সরকার ভেবেছিল আফ্রিকা থেকে চিতা ভারতে নিয়ে আসার। যেসব জঙ্গলে চিতা ছিল, সে রকম কয়েকটা অরণ্যকে বাছাই করাও হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্থানাভাব, চোরাশিকার ও খাবারে খোঁজে গ্রামে ঢুকে পড়ায় পিটিয়ে মারার কারণে চিতা বিলুপ্ত হয়েছিল। সেভাবে এবারেও বিজেপি সরকার এই পরিকল্পনাকে নিয়ে জয়ডঙ্কা বাজালেও পরিবেশবিদরা ৮টি চিতার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁদের মতে, চিতার ঘুরে বেড়ানোর মতো জায়গা, শিকার, খাদ্য এবং শাবকদের কীভাবে বড় করবে তা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তাছাড়াও এই জঙ্গলে রয়েছে হায়নার পাল, দেশীয় চিতাবাঘ, যারা এই জাতীয় চিতার শত্রুপশু। বিশেষত অচেনা-অজানা পরিবেশে ও আবহাওয়ায় এরা আদৌ কতটা মানিয়ে নিতে পারবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা জানান, আফ্রিকান চিতা অত্যন্ত শান্ত পশু। কুনো জঙ্গলের চারপাশে অন্তত ১৫০ গ্রাম রয়েছে। যেখানে রয়েছে অসংখ্য কুকুর। তারাও এদের ছিঁড়ে খেয়ে ফেলবে।