আলিপুরদুয়ার: অতিবৃষ্টির জেরেই কি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বাড়ছে নাইরোবি ফ্লাইয়ের প্রকোপ? উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় নাইরোবি ফ্লাই বা অ্যাসিড পোকার উপদ্রবের কারণ হিসেবে অতিবৃষ্টিকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ৷ বাংলায় বর্ষা প্রবেশের পর থেকেই উত্তরবঙ্গের সব জেলায় ঢেলে বৃষ্টি হয়েছে৷ বৃষ্টিপাত কমতেই এবার নাইরোবি ফ্লাইয়ের আতঙ্কে কাঁপছেন উত্তরবঙ্গের মানুষ৷
শিলিগুড়ির পর এবার নাইরোবি ফ্লাইয়ের আতঙ্ক আলিপুরদুয়ারে৷ জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের খোয়ারডাঙার এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে পোকাটি৷ এক কিশোর-সহ মোট আটজন ওই অ্যাসিড পোকার আক্রমণের শিকার হয়েছেন৷ আক্রান্ত হয়েছেন খোদ জেলা পরিষদের সভাপতি শীলা দাসের ছেলেও৷ ওই পোকার সংস্পর্শে আসা মাত্রই শরীরের ওই নির্দিষ্ট জায়গাটিকে তরল জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা৷
নাইরোবি ফ্লাইয়ের সংস্পর্শে এলে আক্রান্তের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঝলসে যায়৷ যদিও এই পোকা কামড়ায় না৷ পতঙ্গ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নাইরোবি ফ্লাইয়ের দেহ থেকে পেরিডিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়৷ যা চামড়া বা ত্বককে পুড়িয়ে ফেলে৷ শরীরে চাকা চাকা ফোস্কা হয়৷ সঙ্গে গা-হাত-পা ও মাথায় ব্যথা এবং জ্বর হয়৷ সুদূর কেনিয়ার নাইরোবিতে বিশেষত এদের দেখা যায়৷ তবে বাংলায় এরা অ্যাসিড পোকা নামে পরিচিত৷ এই পোকার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে আশেপাশে থাকা পার্থেনিয়াম গাছ বা জঙ্গল কেটে ফেলতে হয়৷
আরও পড়ুন: Bankura: দু’টি মৃত্যুতেও হুঁশ ফেরেনি, বিদ্যুতের তারের জঙ্গলে বাঁকুড়া যেন মরণফাঁদ
আলিপুরদুয়ারে আক্রান্ত প্রত্যেকের শরীরে ওই উপসর্গ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে৷ এর আগে, এই পোকার কামড়ে শিলিগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে, এমনকি গ্রামীণ এলাকার বেশ কিছুজন আহত হয়েছেন৷ আতঙ্কে অনেকেই হস্টেল ছেড়ে বাড়ি চলে গিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক সন্দীপ সেনগুপ্তও এই পোকার শিকার হয়েছেন। এদিকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে নাইরোবি ফ্লাইয়ের ‘হানায়’ উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর৷ পতঙ্গ বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিবৃষ্টির কারণেই ওই পোকাদের উৎপাত এতটা বেড়ে গিয়েছে৷ সন্ধ্যে নামার কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে বাড়ির দরজা জানালা বন্ধ করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। সঙ্গে ফুল হাতা জামা ব্যবহারেরও নিদান দিয়েছেন৷